BJP

BJP: ভবানীপুরের উপ-ভোট রুখতে মরিয়া বিজেপি, তৃণমূলের কমিশন যাত্রার আগে ‘ঢেউ’ তুলছে পদ্ম

রাজ্যের মোট সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন হওয়া দরকার।তবে রাজনৈতিক মহলের নজর মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্র ভবানীপুরের দিকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২১ ১৬:৫৯
Share:

মরিয়া রাজ্য বিজেপি চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। ফাইল চিত্র

ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসনে উপনির্বাচন কবে? তৃণমূল চাইছে পুজোর আগে। বিজেপি চাইছে, ৫ নভেম্বরের আগে নয়। এবং এই ব্যাপারে দিলীপ ঘোষ-শুভেন্দু অধিকারী একমত। সেই ঐকমত্যের ভিত্তিতেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এখন উপনির্বাচন না-করতে আটটি কারণ দেখিয়েছে রাজ্য বিজেপি।

Advertisement

রাজ্যের মোট সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট হওয়ার কথা। প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে জঙ্গিপুর ও শামসেরগঞ্জে বিধানসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়নি। ভোটে জিতলেও ফল ঘোষণার আগেই করোনায় মারা যান খড়দহের তৃণমূল প্রার্থী কাজল সিংহ। বিধায়ক পদে শপথ নেওয়ার পরে যান গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। দিনহাটা ও শান্তিপুরের বিধায়ক পদ ছেড়েছে বিজেপি। আবার ভবানীপুর জিতেও মমতার জন্য বিধায়ক পদ ছেড়েছেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।

পুজোর আগে ভোট হবে ধরে নিয়ে এখন থেকেই ভবানীপুরে প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল। বস্তুত, সেই দাবিতে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনেও যাচ্ছে তারা। প্রসঙ্গত, মমতা নিজেও বার বার বলছেন, রাজ্যে উপ নির্বাচন করানোর মতো ‘ইতিবাচক’ পরিস্থিতি রয়েছে। ভবানীপুরের কয়েকটি ওয়ার্ডে কোভিড সংক্রমণ, মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘জিরো! জিরো! জিরো!’’

Advertisement

কিন্তু বেঁকে বসেছে রাজ্য বিজেপি। কারণ, তারা চায়, ৫ নভেম্বরের মধ্যে যাতে ভোট না হয়। তা হলে মমতাকে অন্তত একদিনের জন্য হলেও মুখ্যমন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিতে হবে। কারণ, তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন ৫ মে। ফলে তার ছ’মাসের মধ্যে তাঁকে বিধানসভায় নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। সংবিধান তেমনই বলে।

উপ-নির্বাচন এখনই চায় না বিজেপি। স্পষ্ট বলছেন দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র

রাজ্য বিজেপি প্রথম থেকেই জানিয়েছে, এই ব্যাপারে দলের বক্তব্য জানাবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তবে বুধবার দিলীপ বলেছেন, ‘‘রাজ্যে করোনা বিধি চালু। স্কুল, কলেজ, ট্রেন বন্ধ। এই অবস্থায় নির্বাচন হবে কী ভাবে? নির্বাচন চাইলে সব কিছু স্বাভাবিক বলে জানিয়ে দেওয়া হোক!’’

উপনির্বাচন ঠেকাতে রাজ্য বিজেপি-র তরফে দিল্লিতে যা জানানো হয়েছে, তাতে বড় করে দেখানো হয়েছে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতিকে। রাজ্য সরকারের করোনা বিধিকে অস্ত্র করে বিজেপি বলেছে, বাংলায় লোকাল ট্রেন বন্ধ, বাস চলছে কম যাত্রী নিয়ে। করোনার জন্য বিরোধীদের রাজনৈতিক কর্মসূচিও পালন করতে দেওয়া হচ্ছে না। কদিন আগেই দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী-সহ শীর্ষ বিজেপি নেতাদের পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তা ছাড়া,সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অক্টোবর পুজোরও মাস।

এর পাশাপাশি কয়েকটি ‘রাজনৈতিক যুক্তি’ও দিয়েছে বিজেপি। বলা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতির কথা বলে রাজ্য সরকারই ১২২টি পুরসভার নির্বাচন আটকে রেখেছে। বিজেপি সূত্রের খবর, এ-ও বলা হয়েছে যে, রাজ্যে পূর্ণ গরিষ্ঠতা নিয়ে তৃণমূল সরকার চলছে। ফলে সাতটি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন না হলেও সরকার সঙ্কটে পড়বে না।

তবে তৃণমূল সব আসনেই ভোটগ্রহণের পরিস্থিতি রয়েছে বলে মনে করছে। শাসক শিবির সূত্রের খবর, সেটাই তারা কমিশনকে ফের জানাবে বৃহস্পতিবার। তবে কমিশনে আপত্তির কথা জানালেও শেষ পর্যন্ত পুজোর আগেই উপনির্বাচন হলে বিজেপি-ও তার প্রস্তুতিও শুরু করেছে। সাত আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ কেউ রাজ্য দফতরে যাতায়াতও শুরু করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement