Sedition Case

BJP: ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ হুমকিতে গেরুয়া অস্ত্র ভগৎ সিংহও

ঘটনার সূত্রপাত মালাবার বিদ্রোহের শতবর্ষ উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে স্পিকার এম বি রাজেশের বক্তব্যকে ঘিরে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২১ ০৯:২৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

শাসকের অপছন্দের কথা বললেই রাষ্ট্রদ্রোহ! মোদী জমানায় দেশের নানা প্রান্তে এমন ঘটনা দেখতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন নাগরিকেরা। এ বার স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের ব্যাখ্যা পছন্দ না হওয়ায় কেরল বিধানসভার স্পিকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ রুজু করার দাবিতে আসরে নেমে পড়ল বিজেপি! বাম সরকারের স্পিকারের বিরুদ্ধে এমন দাবি তোলার ক্ষেত্রে গেরুয়া শিবির হাতিয়ার করছে ভগৎ সিংহকে। স্বাধীনতা আন্দোলনে যাঁকে বামপন্থী নায়ক হিসেবেই দেখেন তাবৎ বামেরা এবং গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে যাঁর দূরতম সংযোগও নেই!

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত মালাবার বিদ্রোহের শতবর্ষ উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে স্পিকার এম বি রাজেশের বক্তব্যকে ঘিরে। মলপ্পুরমে রাজ্য গ্রন্থাগার পরিষদ আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে স্পিকার রাজেশ বলেন, শতবর্ষ আগের আন্দোলনের অন্যতম চরিত্র ভেরিয়ান কুন্নাতু কুঞ্জহামিদ ‘হাজি’ তাঁর অবদানের জন্য ইতিহাসে ভগৎ সিংহদের সমান মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য। ব্রিটিশেরা প্রস্তাব দিয়েছিল, কৃতকর্মের দায়ে ‘হাজি’ ক্ষমা চেয়ে নিলে তাঁকে মক্কা পাঠানো হবে পুণ্য অর্জনের জন্য। ‘হাজি’ বলেছিলেন, ক্ষমা চাইতে হলে মক্কার চেয়ে তাঁর কাছে মৃত্যুই শ্রেয়!

এর পরেই গোল বাধিয়েছে বিজেপি এবং সঙ্গে আরএসএসের একাংশ। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সি কৃষ্ণকুমারের অভিযোগ, স্পিকার রাজেশ ভগৎ সিংহের ‘অবমাননা’ করেছেন এবং তাঁর দাবি, রাজেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে মামলা শুরু করতে হবে। কৃষ্ণকুমারের যুক্তি, ধর্মীয় কোনও গোষ্ঠীর নেতাকে ভগৎ সিংহের সঙ্গে তুলনা করে তাঁর মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীকে ‘অসম্মান’ করা হয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে রাষ্ট্রদ্রোহের কী সম্পর্ক? কৃষ্ণকুমারের মতে, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের স্বীকৃত নায়কদের অবমাননা করা রাষ্ট্রদ্রোহেরই শামিল। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের কাছে এই বিষয়ে দলের ব্যাখ্যাও জানতে চেয়েছেন তিনি। তাঁরই পাশে দাঁড়িয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রন।

Advertisement

কেরল সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত রাজ্য সম্পাদক এ বিজয়রাঘবন অবশ্য গোটা বিতর্ককে ‘বিজেপির অপচেষ্টা’ বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। তাঁর সাফ কথা, রাজেশের বক্তব্যে ভগৎ সিংহের কোনও অবমাননা তো নেই-ই। তার সঙ্গে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ টেনে আনা একেবারেই ‘অবান্তর এবং দুরভিসন্ধিমূলক’। বিজয়রাঘবনদের আরও কটাক্ষ, ‘‘ভগৎ সিংহ সম্পর্কে বিজেপি-আরএসএস নেতাদের কাছ থেকে বক্তৃতা শুনতে হবে, এত দুর্দিন আসেনি এখনও!’’

কৃষ্ণকুমারেরাও অনড়। তাঁরা হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন, রাজেশ বা সিপিএম নেতারা ক্ষমা না চাইলে ‘দেশপ্রেমিক মানুষ’ বড়সড় প্রতিবাদে নামবেন! স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতার নায়কদের ‘অবমাননা’ ঘরে বসে মেনে নেওয়া হবে না!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement