আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ বার কৌশলী সিদ্ধান্ত নিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। —ফাইল ছবি।
আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য। মহালয়ার প্রাক্-সন্ধ্যায় কলকাতার প্রতিবাদ মিছিল জানান দিয়েছে, শারদোৎসবেও আন্দোলনের রেশ থাকবে। এই প্রতিবাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ বার কৌশলী সিদ্ধান্ত নিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এ বারে দুর্গাপুজোয় কেন্দ্রীয় নেতা বা মন্ত্রীরা কলকাতা বা বাংলার কোনও প্রান্তের পুজোর উদ্বোধনে অংশ নেবেন না বলে বিজেপি সূত্রে খবর। তবে এ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নেতা-মন্ত্রীদের। রাজ্য থেকে দু’জন মন্ত্রী মোদীর মন্ত্রিসভায় রয়েছেন। এক জন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, অন্য জন বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। তাদের নিজ নিজ এলাকায় পুজোর উদ্বোধন করার অনুমতি দিয়েছেেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এ ছাড়াও, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি পরিষদীয় দলের সদস্য এবং সাংসদরা পুজোর উদ্বোধন করতে পারবেন।
গত বছর সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের দুর্গাপুজোর মণ্ডপ তৈরি হয়েছিল অযোধ্যার রাম মন্দিরের আদলে। কলকাতা পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সজল ঘোষ ওই পুজোর উদ্যোক্তা। রাম মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপের উদ্বোধন করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। উত্তর কলকাতার এই বিখ্যাত পুজোয় এ বার কোনও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানই হচ্ছে না। প্রথম দিকে শোনা গিয়েছিল, শাহ কিংবা বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নড্ডা সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের পুজোর উদ্বোধনে আসবেন। কিন্তু আরজি করের ঘটনার জেরে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। বিজেপি কাউন্সিলর সজল বলেছেন, ‘‘চিকিৎসক বোনকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এ বার আমরা কোনও উদ্বোধন পর্ব রাখছি না। বৃহস্পতিবার থেকে দর্শনার্থীদের জন্য মণ্ডপ খুলে দেওয়া হবে।’’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি শহরের নান্দনিক ক্লাবের পুজোর সঙ্গে আবার অধিকারী পরিবার যুক্ত। বিরোধী দলনেতার ভাই তথা কাঁথির সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারী এই পুজোর অন্যতম কর্তা। বিজেপি সূত্রে খবর, পুজো কমিটির সদস্যেরা কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে দিয়ে পুজোর উদ্বোধন করাতে অনুরোধ করেছিলেন। পত্রপাঠ সেই অনুরোধ খারিজ করে দিয়েছেন সৌমেন্দু। বিকল্প হিসাবে ৬ অক্টোবর ওই পুজোর উদ্বোধন করবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
তবে, পুজোর সময় কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কলকাতায় আসছেন না, এমনটা নয়। বুধবার রেলের একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করতে কলকাতায় রয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনিও কোনও পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাবেন না বলেই বিজেপি সূত্রে খবর। পুজো চলাকালীন কলকাতায় আসার কথা আরও এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের। মন্ত্রকের কর্মসূচিতেই কলকাতায় আসবেন তিনি। কিন্তু কোনও দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে অংশ নেবেন না জলশক্তি মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই মন্ত্রী, তেমনটাই জানাচ্ছে রাজ্য বিজেপির একটি সূত্র।