Post Poll Violence

Post Poll Violence: পাঁচ মাস পরে মৃত্যু, নিশানায় ‘ভোট সন্ত্রাস’

তৃণমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নির্বাচনের পরে পাঁচ মাস কেটে গেছে। হঠাৎ এই রকম অভিযোগ তোলা রাজনৈতিক সুবিধা পেতে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উস্তি শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:৪৮
Share:

হাহাকার: মৃত বিজেপি নেতা মানস সাহার স্ত্রী প্রীতি। বুধবার ঠাকুরপুকুরের এক হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র।

বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিন গণনাকেন্দ্র থেকে বের হতেই তৃণমূলের লোকজন লাঠি-রড-ইট দিয়ে মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ। মাস দু’য়েক চিকিৎসার পরে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন মগরাহাট পশ্চিম কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী মানস সাহা। কিছু দিনের মধ্যে তাঁর ফের শরীর খারাপ হয়। আবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার সেখান থেকে ছুটি পাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু এ দিনই ঠাকুরপুকুরের বেসরকারি হাসপাতাল থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, মারা গিয়েছেন বছর একষট্টির মানস।

Advertisement

মগরাহাট পশ্চিম কেন্দ্রের ইয়ারপুর পঞ্চায়েতের ইয়ারপুর গ্রামের বাসিন্দা মানস প্রাক্তন সিবিআই অফিসার। তাঁর মৃত্যুতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃ্ত্ব। বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘এক জন বিরোধী প্রার্থীকে সরকারি দলের পোষা গুন্ডাবাহিনীর হামলায় প্রাণ দিতে হল, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এই ঘটনা বাংলার মাথা আর এক বার হেঁট করে দিল। বাংলার গণতন্ত্রের জন্য আজকের দিনটা কালো দিন।’’ তাৎপর্যপূর্ণ হল, এখন বিজেপি মানসের মৃত্যুকে ‘রাজনৈতিক হত্যা’ হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করলেও গত ২ মে ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোট গণনাকেন্দ্রের সামনে তাঁর উপরে হামলার ঘটনার পরে দলের তরফে থানায় অভিযোগ করা হয়নি।

তৃণমূল অবশ্য বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তৃণমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মৃত্যু নিশ্চয়ই দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু নির্বাচনের পরে পাঁচ মাস কেটে গেছে। হঠাৎ করে এই রকম একটা অভিযোগ তোলা হচ্ছে শুধু রাজনৈতিক সুবিধা পেতে। এমন কোনও ঘটনার কথা বিজেপি বা অন্য কেউ এতদিন তো বলেনি! তৃণমূলের কেউ এই রকম কোনও ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়।’’ আর মগরাহাট পশ্চিমের বিধায়ক গিয়াসুদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘গণনাকেন্দ্রের বাইরে কী ঘটেছিল, তা আমি জানি না। ঘটনার সময়ে আমি ভিতরে ছিলাম।’’

Advertisement

বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ এ দিন ঠাকুরপুকুরের হাসপাতালে গিয়ে মানসের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করেন। মগরাহাট পশ্চিম কেন্দ্রে বিজেপির নির্বাচনী আহ্বায়ক ছিলেন গৌর ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের মারেই মৃত্যু হয়েছে ওঁর।’’ তা হলে হামলার ঘটনার পরে থানায় অভিযোগ করা হয়নি কেন? গৌরের দাবি, সে সময়ে থানায় অভিযোগ জানানোর মতো পরিস্থিতি ছিল না। তবে তফসিলি কমিশনকে দলের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। বিজেপির জেলা নেতা সুফল ঘাঁটু জানিয়েছেন, এখন মানসের মৃত্যুর পরে তাঁরা থানায় খুনের অভিযোগ করবেন। ঘটনার সিবিআই তদন্তেরও দাবি তুলেছেন তিনি।

২ মে মারধরের পরে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা মানসকে উদ্ধার করে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে নিয়ে যাওয়া হয় মল্লিকবাজারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে অস্ত্রোপচার হয় তাঁর। মাস দু’য়েক পরে বাড়ি ফেরেন মানস। পরিবার ও দলীয় সূত্রের খবর, রবিবার পেট ব্যথা শুরু হয় তাঁর। টানা হেঁচকি উঠছিল। তখন তাঁকে ঠাকুরপুকুরের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

মানসকে হাসপাতাল থেকে আনতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী দেবু গায়েনের। তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে এ দিন সকালে ছুটির কথা জানানো হয়েছিল। তার পরে কী ভাবে হঠাৎ উনি মারা গেলেন, তা স্পষ্ট নয়। নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ঠাকুরপুকুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement