BJP's Protest on Dengue Situation

ডেঙ্গি রুখতে ধর্নায় বসতে চায় বিজেপি, সাত দিনের কর্মসূচি শুনে বিরোধীর ‘ভূমিকা’ শেখাল তৃণমূল

বিজেপি এই আন্দোলনের ঘোষণা শুনে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘ওদের যদি সদিচ্ছা থাকে এবং সঙ্গে আদৌ লোকজন থাকে তবে বরং ডেঙ্গির বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করুক। তার জন্য প্রচার করুক।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:৪২
Share:

বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য (বাঁ দিকে) এবং তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (ডান দিকে)। ফাইল চিত্র।

রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে বিরোধী দল বিজেপি। সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য জানান, রাজ্যের সমস্ত সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পুরসভা এবং পুরনিগমের সামনে বুধবার থেকে আগামী সাত দিন বিক্ষোভ কর্মসূচি চালানো হবে। এই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এক দিকে যেমন সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো হবে, পাশাপাশি, সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করাই লক্ষ্য বিজেপির। শমীকের দাবি, রাজ্যে ডেঙ্গি মহামারির আকার ধারণ করে ফেলার পরেও সরকারের পক্ষে কোনও দায়িত্বশীল পদক্ষেপ না হওয়াতেই আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এই ঘোষণার নিন্দা করে তৃণমূলের দাবি, বিরোধী দলের সঠিক ভূমিকা নিয়ে বরং বিজেপির ডেঙ্গি মোকাবিলায় পথে নামা উচিত।

Advertisement

শমীক বলেন, “বুধবার থেকে সারা রাজ্যে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দফতরের সামনে, পুরসভা এবং পুরনিগমের সামনে প্রতীকী প্রতিবাদ, ধর্না, অবরোধ এবং প্রতিবাদ সভা শুরু করবে যুব মোর্চা, শিক্ষক সেল এবং স্বাস্থ্য সেলের সদস্যরা।” শহরের ডেঙ্গির পরিস্থিতি উল্লেখ করতে গিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকেও কটাক্ষ করেছেন শমীক। তাঁর কথায়, “কলকাতা পুরসভার মেয়র আবার স্টেপ আউট করে ছয় মারার মতো মন্তব্য করেছেন। তিনি তো এই ডেঙ্গির জন্য মানুষকে দায়ী করেছেন। তিনি মন্তব্য করেছেন, কলকাতাবাসীর ভবিতব্য হচ্ছে ডেঙ্গি। কারণ, এখানে সচেতনতার অভাব।” বিজেপি এই আন্দোলনের ঘোষণা শুনে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘ওদের যদি সদিচ্ছা থাকে এবং সঙ্গে আদৌ লোকজন থাকে তবে বরং ডেঙ্গির বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করুক। তার জন্য প্রচার করুক। ধর্না দিয়ে পুরসভার কাজের অসুবিধা না করে বরং সামাজিক কাজে অংশ নিক বিজেপি।’’

শমীক প্রশ্ন তুলেছেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করার পরিকাঠামো কেন নেই সরকারের? কয়েকটি পুরসভা থেকে অস্থায়ী কর্মীদের পাঠানো হচ্ছে পরিস্থিতি জানার জন্য, কিন্তু সামগ্রিক ভাবে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে এই ডেঙ্গি রোখার জন্য পুরসভা এবং পুরনিগমগুলির যে পদক্ষেপ করার কথা, সেটা দেখা যাচ্ছে না। যদি কলকাতা এবং শহরতলিগুলির ছবি এই হয়, তা হলে গ্রামগুলির কী হাল, প্রশ্ন শমীকের। তাঁর কথায়, “এত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তার কোনও রেকর্ড নেই! ডেঙ্গিতে মৃত্যু বলা যাবে না, এখানেও কো-মর্বিডিটি খুঁজে বেড়ানো হচ্ছে? অনেক জায়গায় মৃত্যু হচ্ছে, তার পরীক্ষাও হচ্ছে না।”

Advertisement

শমীক আরও প্রশ্ন তুলেছেন, এত মানুষের মৃত্যুর পর এখন এক লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর ছুটি বাতিল করা হল? এক মাস পরে সরকারের ঘুম ভাঙল? শমীক বলেন, “কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয় নিজে জানিয়েছেন, অন্যান্য রাজ্য ডেঙ্গি নিয়ে সহযোহগিতা করলেও একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ এ বিষয়ে কোনও তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছে না।”

মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য ভবনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। স্বাস্থ্যসচিবের কাছে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন বিজেপি বিধায়ক। তাঁর কথায়, “কেন ডেঙ্গি মোকাবিলায় উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হয়নি? কেন চিকিৎসকেরা ডেঙ্গি লিখতে ভয় পাচ্ছেন? এই সব জিজ্ঞাসা করতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই স্বাস্থ্য ভবনে গিয়েছিলাম।” রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে একশো জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর কাছে সমস্ত তথ্য রয়েছে বলেও দাবি শুভেন্দুর।

স্বাস্থ্য ভবনে বাধা পেয়ে বিধানসভায় ফিরে এসে রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও চিঠি দেন বিজেপি বিধায়কেরা। মোট ২৪ জন বিধায়ক সেই চিঠিতে স্বাক্ষর করেন। চিঠিতে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্য সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে, তা বিস্তারিত জানতে চেয়ে মোট ছ’টি প্রশ্ন করা হয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত খাতে কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ অর্থ কী ভাবে খরচ করা হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন বিজেপি বিধায়কেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement