শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র তৈরির ক্ষেত্রে টাকা নয়ছয় ও কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, মঙ্গলবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বের পরে বিরোধীদলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে পাশে নিয়ে এই অভিযোগ করলেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ।
শঙ্করের অভিযোগ, ‘‘ন’লক্ষের কাছাকাছি মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীর প্রশ্ন তৈরি করতে খরচ হওয়ার কথা পাঁচ থেকে ছ’কোটি টাকা। গত বার মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমে প্রায় ছ’লক্ষ হয়ে গিয়েছিল। তা সত্ত্বেও প্রশ্ন তৈরি করতে ২০ থেকে ২৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এ বার তো মাধ্যমিকের প্রশ্নে কিউআর কোড-ও ছাপতে হয়েছে। আমাদের আশঙ্কা এ বার হয়তো পর্ষদ প্রশ্ন তৈরি করতে খরচ দেখাবে ৫০ কোটি টাকা।’’ শঙ্করের প্রশ্ন, কিউআর কোড তৈরি করার বরাত কি টেন্ডারের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে?
শঙ্করের অভিযোগ, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষার কনফিডেনশিয়াল সেলের পর্ষদ কর্মী তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা। সেখান থেকেই প্রশ্ন আগে থেকে সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। এর জন্য বারবার কেন পরীক্ষার্থীদের বলি করা হচ্ছে? মোবাইল কী ভাবে পরীক্ষার হল পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে? তার জন্য তো স্কুলও দায়ি। তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?’’
মঙ্গলবারই মালদহে সাংবাদিক সম্মেলনে পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি যে কোনও তদন্তের সম্মুখীন হতে প্রস্তুত রয়েছি। সমস্ত তথ্যই পর্ষদের কাছে আছে। এখন বলা হচ্ছে পর্ষদের কর্মীরা শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। সমস্ত কর্মীরাই কোনও না কোনও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। সবাইকে সরিয়ে দিলে, আগামী বছর মাধ্যমিক হবে কি না, সন্দেহ আছে।’’
পর্ষদের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘প্রশ্ন তৈরির খরচ অডিট রিপোর্টে স্বচ্ছ ভাবে দেওয়া আছে। মোবাইলে ছবি তুলে সমাজ মাধ্যমে পাঠাতে গিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়ে যাচ্ছে পরীক্ষার্থীরা। তাদের আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে না তো? পর্ষদের দক্ষ কর্মীকেই কনফিডেনশিয়াল সেলে রাখা হয়েছে। কে কোন দল করে, তা বিবেচ্য নয়। যে স্কুলগুলো থেকে প্রশ্ন সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ, সেই স্কুলগুলোর কর্তৃপক্ষকেও বৈঠকে ডেকে জানতে চাওয়া হবে কী ভাবে ঘটনাটি ঘটেছে। দোষ প্রমাণিত হলে কাউকেই ছাড়া হবে না।’’
মাধ্যমিক পরীক্ষার বেনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তৃণমূল নেতা শঙ্কুদেব পান্ডা সোমবার জানান, তিনি সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করবেন। এ দিন সেই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘মামলা করলে তাকে স্বাগত।’’