প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ক্ষমতায় এসে পূর্ব মেদিনীপুরের ‘ময়না’ মডেলের ধাঁচে সারা রাজ্যে রুই-কাতলা চাষে উদ্যোগী হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এখন তাই ময়না-র ধাঁচে বিভিন্ন জেলায় বড় জলাশয়ে মাছ চাষ চলছে।
বুধবার ‘মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’ আয়োজিত এক সভায় রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরীর দাবি, ‘‘প্রথম ৫-৭ বছর ময়নায় মাছ চাষ ভালে হয়েছিল। পরে ওখানকার মাছচাষীদের লোভ বেড়ে যায়। ব্রয়লার মুরগির ধাঁচে ওরা মাছ চাষ শুরু করায় তা স্বাদহীন হয়ে গিয়েছে।’’
মৎস্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না ফিশারিজ় অ্যাসোসিয়েশনের নেতা মদনমোহন মাইতির অভিযোগ, ‘‘মন্ত্রী কিছু না জেনেই এই মন্তব্য করেছেন। আমাদের এখানে মাছ চাষ ভালেই হচ্ছে। আমরা কষ্ট করে মাছচাষ করে সংসার চালাই। আমাদের কোনও লোভ নেই।’’ এ দিন মৎস্যমন্ত্রীর কথায় বারবার ময়না মডেলের কথা উঠে আসে। তাঁর কথায়, ‘‘ময়নাতে বিভিন্ন জলাশয়ে পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, জল পুরোপুরি সরিয়ে ফেলতে হবে।’’ ময়নায় মাছের স্বাদহীন হওয়ার পিছনে মৎস্যমন্ত্রীর যুক্তি, ‘‘ওখানে (ময়না) মাছেদের যে খাবার দেওয়া হচ্ছে, তা ডুবে যাচ্ছে। ভাসমান খাবার দিতে হবে।’’
মৎস্যমন্ত্রীর দেওয়া মাছের খাবারের এই তত্ত্বকে নস্যাৎ করে মদন জানিয়েছেন, ‘‘আমরা যথেষ্ট উন্নতমানের খাবার দিই। মন্ত্রী কী ভাবে ওই কথা বললেন? উনি নিজে তো এখানে আসেননি।’’ বিপ্লব মৎস্যমন্ত্রী পদে এসেছেন বছর দেড়েক আগে। এ দিন সভা শেষে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, দেড় বছর আগে পর্যন্ত ময়না মডেলের মাছ চাষ সম্পর্কে কোনও অভিযোগ ছিল না। আগেও চাষীরা মাছেদের যে খাবার দিতেন, এখনও তাই দিচ্ছেন। তা হলে মাছের খাবার জলে ডুবে যাওয়ার জন্য স্বাদহীন হয়ে যাওয়া তত্ত্ব কতটা যুক্তিসঙ্গত? প্রশ্ন এড়িয়ে যান মন্ত্রী।