সকালেই দিল্লির বিমান ধরলেন বিপ্লব মিত্র

সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ সদস্য এবং গঙ্গারামপুর ও বুনিয়াদপুর দুই পুরসভার অধিকাংশ কাউন্সিলরও বিপ্লবের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ভাবে  বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বলে বিপ্লব শিবিরের দাবি।

Advertisement

অনুপকুমার মোহান্ত 

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৯ ০৩:১৭
Share:

বিপ্লব মিত্র। —ফাইল চিত্র

দিল্লি গেলেন বিপ্লব মিত্র। বালুরঘাটে এলেন অর্পিতা ঘোষ। বিজেপি সূত্রে খবর, সব ঠিক থাকলে আগামী সোমবার দলের কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং মুকুল রায়ের হাত ধরেই গেরুয়া শিবিরে পা রাখবেন বিপ্লব। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে এর মধ্যেই দিল্লি গিয়েছেন বিজেপির জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকার।

Advertisement

সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ সদস্য এবং গঙ্গারামপুর ও বুনিয়াদপুর দুই পুরসভার অধিকাংশ কাউন্সিলরও বিপ্লবের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বলে বিপ্লব শিবিরের দাবি। শুক্রবার রাতেই গঙ্গারামপুর থেকে অনুগামী কয়েক জন নেতাকে নিয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছন বিপ্লব। এ দিন সকালে বাগডোগরা থেকে বিমান ধরে তিনি দিল্লিতে গেলেন। পাশাপাশি এ দিন কলকাতা থেকে শতাব্দী এক্সপ্রেস ধরে রাতে বালুরঘাটে পৌঁছন তৃণমূল জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ।

এ জেলার ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের অধিকাংশ সদস্য ও নেতাদের নিয়ে বিপ্লবের গেরুয়া শিবিরে যোগদানের খবরে তৃণমূলের একাংশ কর্মী উদ্বিগ্ন। তবে দল সূত্রের খবর, বিপ্লব যে বিজেপিতে যাবেন, তার সূচনা হয়েছিল লোকসভা ভোটের আগে থেকেই। সবই ছিল পরিস্থিতি ও সময়ের অপেক্ষা।

Advertisement

এ দিন তৃণমূল জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ অভিযোগ করেন, ‘‘পুরো ‘মাস্টারপ্ল্যান’ তৈরিই ছিল। লোকসভা ভোটের আগে উনি বিজেপিতে গেলে আমি বালুরঘাট আসনে হারতাম না। কেননা দলে থেকে তাকে হারানোর যতটা সহজ, দল ছেড়ে গেলে ততটা সহজ নয়। এই আশঙ্কার কথা রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছিলাম।’’

বিপ্লবের বক্তব্য, ‘‘অর্পিতাকে প্রার্থী করা নিয়ে স্পষ্ট করে প্রকাশ্যে আপত্তির কারণ মমতাকে বলেছিলাম। গোপনে কিছুই করা হয়নি। দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী তাঁকে চান না— সেটাই স্পষ্ট করে জানানো হয়েছিল। এবং তাঁকে জেতান যে কঠিন, তা-ও বলা হয়েছিল। তাই দলে থেকে তাঁকে হারানোর অভিযোগ সেটা সর্বৈব মিথ্যা।’’ বিপ্লবের কথায়, ‘‘মানুষ ভোট না দিলে কার কী করার আছে?’’

কেন দল ছাড়ছেন বিপ্লব? তাঁর অনুগামীরা বলছেন, দলের কাছে যোগ্য সম্মান না পাওয়ায় অপমানেই তিনি দল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। তাদের অভিযোগ, অর্পিতার হারে মেজদাকে (বিপ্লব) আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় তিনি চরম অপমানিত বোধ করেন। এর পর তাকে কোণঠাসা করার সমস্ত চেষ্টা হতে থাকে। যোগ্য সম্মান পাবেন বলেই তিনি বিজেপিতে যোগ দিলেন, দাবি বিপ্লব শিবিরের।

সব ঠিক থাকলে, বিপ্লবের হাত ধরেই এ রাজ্যে প্রথম জেলা পরিষদ দখলের সম্ভাবনা দেখছে বিজেপি। পাশাপাশি গঙ্গারামপুর ও বুনিয়াদপুর পুরসভা এবং অধিকাংশ পঞ্চায়েত দখলে নেওয়ার স্বপ্নও দেখছে গেরুয়া শিবির এবং সেটা বিপ্লবের হাত ধরেই।

বিরোধী শূন্য দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের ১৮ জন সদস্যের মধ্যে ১২ জন এর মধ্যেই বিপ্লবের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। এঁদের মধ্যে ৯ জন এখন দিল্লিতে। দু-তিন জন পারিবারিক সমস্যা ও অসুস্থতার কারণে দিল্লিতে যেতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। তবে তাঁরা বিপ্লবের সঙ্গে আছেন বলে জানান।

অর্পিতার অবশ্য দাবি, শেষ পর্যন্ত বিপ্লবের দিকে জেলা পরিষদের ৬ জনের বেশি সদস্যের সমর্থন থাকবে না। অনাস্থা আনা হলেই সব স্পষ্ট হবে। পুরসভাও বিজেপি দখল করতে পারবে না বলে অর্পিতা এ দিন জোর গলায় দাবি করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement