ঘিসিঙ্গ-কুর্সিতে এ বার তামাঙ্গ

দার্জিলিং অবশ্য এখনও স্বাভাবিক হওয়ার কোনও ইঙ্গিত দেয়নি। বরং গুরুঙ্গপন্থীদের তাণ্ডবের আশঙ্কায় ফের গুটিয়ে গিয়েছে দার্জিলিংবাসী। বিনয়ও অবশ্য জোর করে দোকানপাট খোলাতে চান না। তাঁর আশা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে পাহাড়। এই ভাবে বিমল গুরুঙ্গকেও পুরোপুরি কোণঠাসা করা সম্ভব হবে, মনে করছেন প্রশাসনের একাংশ।

Advertisement

প্রতিভা গিরি

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:১২
Share:

দার্জিলিঙের লালকুঠিতে জিটিএ-র কেয়ারটেকার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিলেন বিনয় তামাঙ্গ। নিজস্ব চিত্র।

মোর্চার নিয়ন্ত্রণ এখনও পাননি। তবে প্রশাসনিক ভাবে পাহাড়ের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পথে আরও এক পা এগোলেন বিনয় তামাঙ্গ। সোমবার সকালে দার্জিলিঙের লালকুঠিতে গিয়ে জিটিএ-র কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন বিনয়। আর তার পরেই পাহাড়ের দুই জেলা দার্জিলিং ও কালিম্পঙের উপর থেকে ইন্টারনেট নিয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল রাজ্য।

Advertisement

দার্জিলিং অবশ্য এখনও স্বাভাবিক হওয়ার কোনও ইঙ্গিত দেয়নি। বরং গুরুঙ্গপন্থীদের তাণ্ডবের আশঙ্কায় ফের গুটিয়ে গিয়েছে দার্জিলিংবাসী। বিনয়ও অবশ্য জোর করে দোকানপাট খোলাতে চান না। তাঁর আশা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে পাহাড়। এই ভাবে বিমল গুরুঙ্গকেও পুরোপুরি কোণঠাসা করা সম্ভব হবে, মনে করছেন প্রশাসনের একাংশ।

যে কারণে শারদীয় উপহার হিসেবে ইন্টারনেটের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হল। পাহাড়ে অশান্তি শুরু হওয়ার পরই ইন্টারনেটে নিষেধাজ্ঞা তৈরি হয়। এ দিন রাজ্য পুলিশের এডিজি অনুজ শর্মা জানিয়েছেন, পাহাড়ের এই দুই জেলার মানুষ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য সহযোগিতা করেছেন, জিটিএ-ও কাজ করতে শুরু করেছে এবং শারদীয় উৎসবও এসে গিয়েছে—এই সব কথা মাথায় রেখেই এ বার ইন্টারনেটের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হল।

Advertisement

বিনয়ের সঙ্গেই এ দিন দায়িত্ব নেন অনীত থাপা। তিনি জিটিএ-র ভাইস চেয়ারম্যান হলেন। জিটিএ-র কেয়ারটেকার বোর্ডের মনোনীত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব নিলেন তৃণমূলের নেতা তথা মিরিক পুরসভার চেয়ারম্যান লালবাহাদুর রাই, কার্শিয়াঙের নারী মোর্চার দুই নেত্রী অনু প্রধান ও জয়তুন্নেশা খাতুন এবং কালিম্পঙের মোর্চা নেতা সন্তবীর লিম্বুও।

আরও পড়ুন:কাঁচরাপাড়ার মন ভার, মুকুল-পুত্র তৃণমূলেই

দায়িত্ব নেওয়ার পরেই লালকুঠিতে সুবাস ঘিসিঙ্গ ডিজিএইচসি-র প্রধান হিসেবে যে ঘরে, যে চেয়ারে বসতেন, সেখানেই গিয়ে বসেন বিনয়। গুরুঙ্গ কোনওদিন এই ঘরে বসেননি। গুরুঙ্গ ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, ওই ঘরে ওই চেয়ারে বসার পরেই গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে সরে এসেছিলেন ঘিসিঙ্গ। সে কথা জানেন বিনয়ও। তাই তিনি ওই সেই চেয়ারেই বসেই মন্তব্য করেন, ‘‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবি আদায়ই। কিন্তু, আপাতত মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে পাহাড়ে শান্তি বজায় রেখে বন্ধ হয়ে যাওয়া উন্নয়নে গতি আনাই প্রধান কাজ।’’

তবে মোর্চার কট্টরপন্থীদের প্রভাব এখনও পাহাড়ে যথেষ্টই আছে। মিরিকে জনজীবন স্বাভাবিক থাকলেও সোমবার দার্জিলিঙের দোকানপাট খোলেনি। তবে বিনয়-অনীত-এল বি রাইদের দায়িত্বগ্রহণ দেখতে প্রায় ৬০টি গাড়ি বোঝাই করে অনুগামীরা লালকুঠির সামনে জড়ো হন। কেউ অবশ্য দোকানপাট খোলানোর জন্য জোরাজুরি করেননি। বিনয় জানান, তাঁরা কোনও জবরদস্তি করে দোকানপাট খোলানোর পথে হাঁটবেন না। কিন্তু, ধীরে ধীরে পাহাড় স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে তাঁর আশা। কট্টরপন্থীদের সমালোচনাকে গুরুত্বও দিতে চান না বিনয়। দায়িত্ব নিয়েই অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। সেখানে ছিলেন জিটিএ সচিব বরুণ রায়। পরে জানানো হয়, ১০ অক্টোবরের মধ্যে জিটিএ-র কাজকর্ম, আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করবে অফিসারদের ৫ সদস্যের একটি দল। সেই রিপোর্ট দেখে বোর্ড পদক্ষেপ করবে। জিটিএ-র পাঁচ বছরের কাজকর্ম নিয়ে রাজ্য সরকারও তদন্ত শুরু করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement