Binay Tamang

সুবাস, বিমল, মমতার পর এ বার ধরলেন অধীরের হাত! কংগ্রেসে যোগ দিলেন পাহাড়ের সেই বিনয় তামাং

রবিবার কালিম্পঙের টাউন হলে কংগ্রেসের যোগদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সেখানেই কংগ্রেসে যোগ দেন বিনয়। যোগদানের পর বিনয় জানান, তিনি যখন তৃণমূলে ছিলেন, তাঁর হাত-পা বাঁধা ছিল। কাজ করতে পারছিলেন না ঠিক ভাবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কালিম্পং শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৪০
Share:

—নিজস্ব চিত্র।

বছরখানেক আগেই তৃণমূলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল। তার পর থেকে তাঁকে নিয়ে নানাবিধ গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল পাহাড়ে। পঞ্চায়েত ভোটের সময়েও কখনও হামরো পার্টি, কখনও বিজেপি, আবার কখনও বিমলের দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কাছাকাছি আসতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এ বার সকলকে চমকে দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেসে যোগ দিলেন বিনয় তামাং। কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর হাত থেকে দলীয় পতাকা হাতে তুলে নেন তিনি।

Advertisement

রবিবার কালিম্পঙের টাউন হলে কংগ্রেসের যোগদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সেখানেই কংগ্রেসে যোগ দেন বিনয়। যোগদানের পর বিনয় জানান, তিনি যখন তৃণমূলে ছিলেন, তাঁর হাত-পা বাঁধা ছিল। কাজ করতে পারছিলেন না ঠিক ভাবে। পাহাড়বাসীর উন্নয়নের স্বার্থেই তিনি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। বিনয় আরও বলেন, ‘‘পাহাড় থেকে তিন বার বিজেপিকে জিতিয়েছিলাম। বিজেপি কোনও কাজ করেনি। তাই এ বার কংগ্রেসে যোগ দিলাম। আশা করি, কংগ্রেস আমাকে পাহাড়বাসীর জন্য কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ দেবে।’’

বিনয়ের যোগদান প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ রায় বলেন, ‘‘পাহাড়ের মানুষ বুঝেছেন, তাঁদের অধিকার ও দাবির লড়াইয়ের কংগ্রেস একমাত্র রাজনৈতিক শক্তি। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তৃণমূলের থেকে কংগ্রেস বেশি বিশ্বাসযোগ্য। আগামী লোকসভা ভোটে এর প্রভাব পড়বে।’’

Advertisement

হিসাব মতো রাজনৈতিক জীবনের চতুর্থ ইনিংস শুরু করলেন বিনয়। এক সময় পাহাড়ে সুবাস ঘিসিংয়ের হাত ধরে জিএনএলএফ এবং পরে বিমলের সঙ্গে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা তৈরি করেছিলেন এই নেতা। পরে বছরখানেকের জন্য তৃণমূলেও নাম লিখিয়েছিলেন। কিন্তু বিনয়ের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, পাহাড়ের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভাল ছিল না। শেষে হামরো পার্টির প্রধান অজয় এডওয়ার্ড, বিমলের সঙ্গে নতুন করে নানা কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে দলের থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে ফেলেন বিনয়। তার পর গত বছর ডিসেম্বর মাসে দার্জিলিং পুরসভার অনাস্থা ভোটের পরে তিনি দলই ছাড়েন

শাসক তৃণমূলের সঙ্গত্যাগের পিছনে তাঁর দাবি ছিল, দলে যোগদানের সময় পাহাড়বাসীর জমির পাট্টার বন্দোবস্ত করার আশ্বাস দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। তাঁর আরও অভিযোগ, পাহাড়ের ‘পরিবেশ’, ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা’ ঠিক রাখার ব্যাপারেও তৃণমূল নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁরা বিষয়টি নিয়ে একেবারেই চিন্তিত ছিলেন না।

গত বছরের শেষের দিকে দার্জিলিং পুরসভায় ক্ষমতার হাতবদল হতেই জোট বাঁধার সলতে পাকানো শুরু করেছিলেন পাহাড়ের নেতারা। বিনয়, অজয় এবং বিমলেরা পাহাড়ে গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে এক সঙ্গে হাঁটা শুরু করেন। পরে তাতে যোগ দেয় বিজেপিও। পরে সেখান থেকেও নিজেকে একটু একটু করে সরে যেতে থাকেন বিনয়। একেবারে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে পাহাড়ে ‘মহাজোট’-এর ঘোষণা হয়। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ও তৃণমূলের ‘অঘোষিত’ জোটের কাছে মুখ থুবড়ে পড়ে বিমলদের সেই ‘যৌথ গোর্খা মঞ্চ’। বিজেপি কিছু আসন জিতলেও শোচনীয় অবস্থায় হয় বিমল, অজয়, মন ঘিসিংদের (গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট বা জিএনএলএফ-এর নেতা) অবস্থা শোচনীয়। বিনয় নিজের বাড়ির এলাকার পঞ্চায়েতেই শুধু জেতেন। কিন্তু সেখানেও শাসকের সঙ্গে পার্থক্য ছিল মাত্র একটি আসনের। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসে যোগ দিলেন বিনয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement