বিমলের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে মঙ্গলবার সকালে দার্জিলিংয়ের চৌরাস্তা থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্রে বড় জমায়েত বিনয়পন্থীদের। —নিজস্ব চিত্র।
নবান্নে বৈঠকে বসার আগেই পাহাড়ে ‘শক্তি প্রদর্শন’ করলেন বিনয় তামাং, অনীত থাপারা। বিনয়পন্থী মোর্চা সদস্যদের প্রকাশ্যেই ঘোষণা, পাহাড়ে বিমল গুরুং-এর কোনও জায়গা নেই। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিনয়পন্থী শিবির সূত্রে খবর, নবান্নেও এ দিন তাঁরা বিমল নিয়ে তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট করবেন এবং বিমলের পাহাড়ে ফেরার বিষয়ে যে তাঁরা রাজি নন তা জানাবেন মুখ্যমন্ত্রীকে।
নবান্ন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বিনয় তামাং এবং অনীত থাপাকে বৈঠকে ডাকা হয়েছে বিমলের সঙ্গে বিনয়ের সমঝোতা সূত্র খোঁজার জন্য। পুজোর মুখে পঞ্চমীর সন্ধ্যায় প্রায় তিন বছরের অজ্ঞাতবাস থেকে প্রকাশ্যে আসেন প্রাক্তন গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেসন (জিটিএ) প্রধান এবং মোর্চা নেতা বিমল গুরুং। বিজেপি-র সঙ্গে দীর্ঘদিনের সঙ্গ ত্যাগ করার কথা ঘোষণা করে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরার কথা বলেন।
তার পর থেকেই পাহাড়ে শুরু হয়ে যায় নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ। পাহাড়ে ধীরে ধীরে বিমলের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে থাকে বিনয়পন্থীরা। মঙ্গলবার সকালে দার্জিলিংয়ের চৌরাস্তা থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্রে বড় জমায়েত করেন বিনয়পন্থীরা। বিমল পাহাড়ে ফিরলে অশান্তি বাড়বে, এই দাবি তুলে ‘শান্তি মিছিল’ করেন তাঁরা। সেই জমায়েত থেকে বিমল গুরুং মুর্দাবাদ স্লোগানও ওঠে। বিনয়পন্থী মোর্চা সমর্খকরা বলেন, ‘‘২০১৭ সালে পাহাড়ে যে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, সেখান থেকে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে এনেছেন বিনয় তামাংরা। বিমলকে পাহাড়ে ফেরানো মানেই ফের অশান্তির আগুন জ্বলবে শান্ত পাহাড়ে।”
আরও পড়ুন: বিমল-বিনয়কে মেলানোই আজ বড় পরীক্ষা মমতার
সোমবার বিকেলে বাগডোগরা থেকে বিমানে ওঠার সময়ও বিমল নিয়ে আক্রমণাত্মক ছিলেন বিনয়। তিনি সাফ জানিয়ে দেন বিমলের সঙ্গে কোনও সমঝোতা সম্ভব নয়। বিমানে ওঠার আগে তিনি বলেন,‘‘আইনের চোখে বিমল গুরুং একজন ফেরার অভিযুক্ত। তাঁর সঙ্গে এক মঞ্চে থাকার কোনও প্রশ্নই নেই।”
আরও পড়ুন: জমি বিবাদে গুলি- বোমার লড়াইয়ে রণক্ষেত্র চাঁচোল, মৃত ১, আহত ৩
সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় গঙ্গার ধারে একটি রিসর্টে বসে পাহাড়ের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন বিমল। তিনি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বিনয়পন্থীদের মিছিলের পাশাপাশি ছোট ছোট মিছিল করছেন বিমলপন্থীরাও।
মঙ্গলবারের বৈঠকে আদৌ কোনও সমঝোতা সূত্র পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বলে মনে করছেন শীর্ষ আমলারাও।