Bikaner–Guwahati Express

Bikaner–Guwahati Express Derailment: ‘জ্ঞান আসার পর থেকেই ভাইকে দেখতে চাইছেন মা, কী বলব বলুন! ভাইকে খুঁজে দিন’

কী ভাবে এমন বড় দুর্ঘটনা ঘটল, তা বুঝতেই পারছি না। আমাদের সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। বোন এবং মা জ্ঞান আসার পর থেকেই ভাইকে দেখতে চাইছেন।

Advertisement

চিরঞ্জিত বর্মণ (নির্মাণ শ্রমিক)

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৪৯
Share:

কেউ আটকে নেই তো? দোমহনীতে দুর্ঘটনার পরে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

আমার জীবনে এমন ঘটনা ঘটে যাবে কখনও ভাবতে পারিনি।

Advertisement

রাজস্থানের জয়পুরে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করি আমরা। বাড়ি কোচবিহারের নয়ারহাটে। বাবা নরেশ বর্মণ, মা কেশবালা, বোন পিঙ্কি, ভাই সম্রাট ও আমাদের গ্রামের অন্যরা মিলে আমরা ২২ জনের দল জয়পুর থেকে বাড়িতে ফিরেছিলাম। পিঙ্কির বিয়ে ঠিক হয়েছে। সে জন্যই সকলে একসঙ্গে ফিরছিলাম আমরা। খুশিতে ভাসছিল আমাদের সকলে। করোনার মধ্যে যে কষ্ট গিয়েছে, কাজ পাওয়া নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ছিল, তা কিছুটা কাটিয়ে উঠেছি সকলে। এখন বাড়িতে এত বড় একটা কাজ। ট্রেনের ১৩ নম্বর কামরাটায় যেন বিয়েবাড়িও লেগে গিয়েছিল।

ট্রেন জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন ছেড়ে তিস্তা রেল সেতু পার হয়। তার পরে আচমকাই ট্রেনের গতি খুব বেড়ে যায়। কিছু দূর যাওয়ার পরই ধোঁয়া বার হতে দেখা যাচ্ছিল। হঠাৎই বিকট শব্দ। তার পর আর কিছু মনে নেই। জ্ঞান আসার পরে দেখি, আমাদের কামরা উল্টে পড়ে আছে। চারদিক রক্তে ভেসে যাচ্ছে। কান্নার আওয়াজ।

Advertisement

আমার মা ও বোনের আঘাত লেগেছে। জলপাইগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি। ভাই সম্রাটকে এখনও পর্যন্ত (রাত সাড়ে আটটা) খুঁজে পাইনি। বাবা পাগলের মতো হাউ হাউ করে কাঁদছেন। বাকিরা কে কোথায় আছে, কিছুই বলতে পারছি না। কী ভাবে এমন বড় দুর্ঘটনা ঘটল, তা বুঝতেই পারছি না। আমাদের সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। বোন এবং মা জ্ঞান আসার পর থেকেই ভাইকে দেখতে চাইছেন। কী বলব বলুন তো!

আমার ভাইটাকে খুঁজে দিন দয়া করে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement