বিদ্যুৎ বিশ্বাস
অসম লাইনে ট্রেনে হকারি করছি আজ প্রায় তিরিশ বছর। এমন দুর্ঘটনার মুখোমুখি আগে কখনও হ়ইনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠেছিলাম। যে কামরাটার উপরে অন্য আরও একটা কামরা উঠে গিয়েছে, সেই কামরাতেই ছিলাম। ফল বিক্রি শেষ করে একটু বসেছিলাম।
তিস্তা রেল সেতু পার হওয়ার পর থেকেই ট্রেনের গতি বেড়ে যায় অনেকটা। কিছুক্ষণের মধ্যেই ধোঁয়া বার হতে দেখি। আচমকাই বিকট শব্দ। তার পর আর কিছু জানি না আমি। জ্ঞান ফিরে আসার পর দেখি, বগিটা দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে। আমি জঙ্গলের ধারে পড়ে ছিলাম। কী ভাবে সেখানে এলাম, জানি না। ছিটকে পড়েছি, নাকি কেউ বার করে নিয়ে এসেছে, কে বলতে পারে! ফলের ঝুড়ি কোথায় ছিটকে পড়েছে জানি না সেটাও। চারদিক থেকে তখন শুধু ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার। আর কান্নার শব্দ। আমাকে যে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হয়, তার পাশেই পা কেটে রক্ত ঝরছে এক জনের। পরে শুনেছি, সে নাকি মারা গিয়েছে। কী ভাবে এমন দুর্ঘটনা হল, কিছুই বুঝতে পারছি না। গাইসালে ট্রেন দুর্ঘটনার খবর অনেক দিন আগে শুনেছিলাম। এই দুর্ঘটনা তো সেই ধরনেরই বলে অনেকে বলছে। আমার বাড়ির লোকেদের খবর দিতে পারিনি এখনও।