—ফাইল চিত্র।
নারদ কাণ্ডে জোর ধাক্কা খেল তৃণমূল। ১৩ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। স্টিং অপারেশনের ফুটেজের ভিত্তিতেই এফআইআর করা হয়েছে বলে খবর। যে ১৩ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১২ জনই তৃণমূলের নেতা-নেত্রী-বিধায়ক-মন্ত্রী-সাংসদ। কলকাতা হাইকোর্ট নারদ কাণ্ডের তদন্ত ভার সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়ার পরই বিশেষ তদন্তকারী দলকে কলকাতায় পাঠিয়েছিল গোয়েন্দা সংস্থাটি। সরাসরি দিল্লির নির্দেশ পেয়েই তদন্তকারী দল আজ এফআইআর দায়ের করেছে বলে জানা গিয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্ট নারদ কাণ্ডের তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে দিয়ে জানিয়েছিল, তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট দিতে হবে। কিন্তু সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং তৃণমূল। সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করতে রাজি হয়নি। তবে জানিয়েছিল, সিবিআই স্টিং ভিডিও-র ফুটেজ এবং অন্যান্য বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য এক মাস সময় পাবে। আরও সময় লাগলে কলকাতা হাইকোর্টে ফের আবেদন জানানো যেতে পারে।
আরও পড়ুন:
• নারদের স্টিং অপারেশন, ঘুষ বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূলের ১১ শীর্ষ নেতা
• বঙ্গ জয়ে পঞ্চায়েতই নিশানা বিজেপির
সোমবারই সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া সেই এক মাসের সময়সীমার শেষ দিন ছিল। সিবিআই সূত্রের খবর, বিশেষ তদন্তকারী দল আরও কিছু দিন সময় নিতে চাইছিল। কিন্তু দিল্লির কর্তারা নাকি আর সময় নিতে চাননি। তাই দিল্লির নির্দেশে আজই এফআইআর হয়েছে। যে ১৩ জনকে নারদের স্টিং ফুটেজে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, সিবিআই তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে বলে খবর। অর্থাৎ সাংসদ মুকুল রায়, সুলতান আহমেদ, সৌগত রায়, কাকলি ঘোষদস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ও অপরূপা পোদ্দারের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র এবং বিধায়ক তথা কলকাতার ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। এফআইআর হয়েছে আইপিএস অফিসার এসএমএইচ মির্জার বিরুদ্ধেও।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই এফআইআর-এর বিরোধিতায় সরব হয়েছেন। রাজনৈতিক ভাবে তিনি এর মোকাবিলা করবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।
তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০ (বি) ধারায় (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়়া দুর্নীতিদমন আইনের ৭ ধারা, ১৩ (১) (এ) এবং (ডি) ধারা, ১৩ (২) ধারাতেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে। স্টিং অপারেশনের উদ্যোক্তা তথা নারদ নিউজের কর্তা মাথ্যু স্যামুয়েল সিবিআই-এর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘সিবিআই ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখে বুঝেছে যে সেখানে কোনও কারচুপি নেই। সত্য সামনে আসবে।’’ আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘এফআইআর হওয়া অনিবার্য ছিল। এটা আগেই হত। তৃণমূল সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে সিবিআইকে ৩০ দিন সময় পাইয়ে দিল। ফলে আরও গুছিয়ে এগোতে সিবিআই-এর সুবিধা হয়েছে। আশা করি এই তদন্তে রাজনৈতিক ভাবে কোনও বাধা আসবে না।’’