বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।
ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল বা নাক-এর মূল্যায়নে বিশ্বভারতীর মান বাড়েনি। আগের বারের মতোই ‘বি প্লাস’ এসেছে বুধবার। পয়েন্টও আগের চেয়ে কিছুটা কমে যাওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যের এই একমাত্র কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার একটি ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়ো ফুটেজ ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে বিশ্বভারতীতে।
ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার পত্রিকা। কিন্তু, ফুটেজে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “তোমরা আমাকে কোন সাহসে বলো, ‘স্যর আপনি দায়িত্ব নিন’। আমি তো বলেছিলাম, নাক-এ ইমপ্রুভমেন্ট (বিশ্বভারতীর) আমি করব, সে ক্ষমতা আমার আছে। না হলে আমি এত উৎসাহ নিয়ে বলতাম না। একদম চিন্তা কোরো না, কে আসবে না আসবে, সব ঠিক করব আমি! কিন্তু এখন আমি এই (নাক) নিয়ে কোনও আগ্রহ দেখাব না।”
নভেম্বরের শেষেই বিশ্বভারতী পরিদর্শন করে গিয়েছে নাক-এর প্রতিনিধিদল। পরিদর্শনের আগে থেকেই বিশ্বভারতীর মানোন্নয়নের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছিলেন কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীর অন্দরের একাধিক বিশ্বস্ত সূত্রের দাবি, গত ১৬ সেপ্টেম্বর বিশ্বভারতীর শিক্ষক, শিক্ষিকা ও কর্মীদের নিয়ে উপাচার্য একটি ভার্চুয়াল বৈঠক ডাকেন। সেখানে বিভিন্ন বিষয় আলোচনার পাশাপাশি উপাচার্য নাক নিয়ে ওই মন্তব্য করেন।
এই ভিডিয়ো সামনে আসতেই সমালোচনায় সরব হয়েছে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠন থেকে শুরু করে প্রাক্তনী ও আশ্রমিকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, এই মূল্যায়নের উপরেই নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানের অর্থপ্রাপ্তি ও উত্তরণের বিষয়টি। সেখানে পরিদর্শনের আগেই নাক সম্পর্কে উপাচার্যের এমন মন্তব্যে স্পষ্ট, কেন বিশ্বভারতীর কাঙ্ক্ষিত মানোন্নয়ন ঘটছে না।
প্রবীণ আশ্রমিক সৌরীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কোনও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে সকলকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে হয়। একার দ্বারা কোনও মহৎ কাজ হয় না। এটা উপাচার্যকে বুঝতে হবে। এই মূল্যায়নের ফলে উত্তরণের ক্ষেত্রে আরও পাঁচ বছর বিশ্বভারতীকে যে নানা বাধার মুখে পড়তে হবে, তার দায় কে নেবেন?”
আশ্রমিক সুব্রত সেন মজুমদারের কথায়, “সমস্ত ঘটনা আমার কাছে দুঃখজনক। প্রতিষ্ঠানের প্রতি সকলের যদি শ্রদ্ধা, বিশ্বাস, ভালবাসা না-থাকে, তা হলে কোনও দিনই উপরে ওঠা যাবে না।”
বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠন ভিবিইউএফএ-র সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, “এমন মন্তব্য দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি অবমাননাই নয়, অপরাধও। শিক্ষা মন্ত্রকের কাছে অনুরোধ, তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’
এই বিশ্বভারতীর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।