—ফাইল চিত্র।
তিন বছর আগে বিধানসভা ভোটের প্রচারে সিঙ্গুরে সভা করতে গিয়েছিলেন তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি মঞ্চে আছেন খবর পেয়ে সিঙ্গুরে পৌঁছেও চায়ের দোকানে অপেক্ষা করে ছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি! কংগ্রেসের সঙ্গে মঞ্চ-ভাগ করবেন না বলে। শেষ পর্যন্ত ‘লুকোচুরি’র সে সব অধ্যায় পেরিয়ে একসঙ্গে এ বার পথে নামছেন বাংলার কংগ্রেস ও সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব। ভাটপাড়ায় আজ, মঙ্গলবার যৌথ মিছিল করে পথে নামার শুরু হচ্ছে।
লোকসভা ভোটের পর থেকে লাগাতার অশান্তিতে জেরবার ভাটপাড়ায় শান্তি ফেরানোর দাবিতে আজ কাঁকিনাড়া স্টেশন থেকে মিছিলে অংশগ্রহণ করার কথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের। যৌথ ভাবেই ভাটপাড়া থানায় দাবিপত্র দিতে যাওয়ার কথা তাঁদের। কংগ্রেস ও বামেদের রাজ্য ও জেলা স্তরের আরও নেতারা সেখানে থাকবেন। দু’দলের রাজ্য নেতৃত্বেরই বক্তব্য, বিজেপি ও তৃণমূলের মেরুকরণের রাজনীতি এবং সন্ত্রাসের মোকাবিলায় বিকল্প জোট গড়ে আন্দোলনে নামা ছাড়া উপায় নেই। একসঙ্গে পথে নামার পাশাপাশিই এ বার বিধানসভার আসন্ন উপনির্বাচনে কংগ্রেস ও সিপিএম সমঝোতা করেই প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করবে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কংগ্রেসের (শহরাঞ্চল) আয়োজনে ব্যারাকপুরে পূর্বঘোষিত অবস্থান কর্মসূচি আছে বৃহস্পতিবার। প্রথমে ঠিক হয়েছিল, ব্যারাকপুরের অবস্থান-মঞ্চ থেকে সোমেনবাবু ভাটপাড়া যাবেন। কিন্তু ভাটপাড়ায় সূর্যবাবুদের মিছিলের ডাক ছিল আজই। পৃথক কর্মসূচি না করে যৌথ প্রতিবাদের জন্য সক্রিয় হন কংগ্রেস নেতারা। সূত্রের খবর, সোমেনবাবু ও সূর্যবাবুর মধ্যে কথা হয়েছে বেশ কয়েক বার। তাঁদের আলোচনায় ঠিক হয়েছে, দু’দলের বিধায়কেরা যেমন যৌথ ভাবে বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে চলছেন, তার পাশাপাশিই দু’পক্ষের নেতা-কর্মীরাও যেখানে সম্ভব, সেখানেই যৌথ রাজনৈতিক কর্মসূচি নেবেন। আগামী বিধানসভা ভোটের আগে বাম-কংগ্রেসের যৌথ মঞ্চকে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলাই তাঁদের লক্ষ্য।
উত্তর কলকাতা জেলা কংগ্রেসের ডাকে সোমবার ডিসি (নর্থ) দফতরের বাইরে অবস্থান কর্মসূচিতে গিয়ে সোমেনবাবু বলেছেন, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে এলাকা দখলের লড়াইয়ে মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। এই দুই দলের মেরুকরণের রাজনীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একটি বিকল্প গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল জোট গড়ে তুলতেই হবে।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মতে, বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ সব মানুষকে একজোট করার যে ডাক তাঁরা দিয়েছিলেন, তার প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়ছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।