এখানেই ফেটে ছিল বোমা।
কোথায় চাপা দেওয়া আছে বোমা, সেই আতঙ্ক নতুন ছড়াল জগদ্দল, ভাটপাড়া এলাকায়। দিনে দুপুরে বোমাবাজি এখন ভাটপাড়া-জগদ্দলে নতুন কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু ইটের পাঁজায় লুকনো বোমায় দশ বছরের বালিকা যে ভাবে জখম হয়েছে, তাতে এলাকার বাসিন্দারা কিছুতেই নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না। তাঁরা বলছেন, ‘‘কোথায় বোমা লুকনো রয়েছে, তা আমরা জানি না। বাচ্চারা খেলতে খেলতে খেলতে কোথায় যাবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। এ ভাবে বাড়ির ছেলেমেয়েদের বাইরে ছাড়ব কী ভাবে!’’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পোষা দু’টি ছাগলকে পাতা খাওয়াতে নিয়ে গিয়েছিল জগদ্দলের ৫ নম্বর লাইনের সাফিয়ানা খাতুন। ছাগল দু’টি গাছের নীচে ইটের পাঁজায় উঠে পড়লে তাদের পায়ের চাপে নিচে রাখা বোমা ফেটে যায়। গুরুতর জখম হয় সাফিয়ানা, মারা যায় ছাগল দু’টি।
সাফিয়ানাকে পুলিশ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছে। শুক্রবার তার অবস্থা কিছুটা ভাল বলে জানিয়েছেন পরিবারের লোকেরা। তবে সে পুরোপুরি বিপন্মমুক্ত কিনা সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয় তাঁরা। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আরও এক দিন পার হলে সে বিষয়ে তারা জানাতে পারবেন।
সাফিয়ানার ওই ঘটনার পরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। এ দিন দুপুরে দেখা গেল পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। পাড়ার অনেকেই দূরে দাঁড়িয়ে। কেউ কাছে যাওয়ার সাহস পাননি। এলাকার বাসিন্দা রহিম আলি বলেন, ‘‘গতকালের ঘটনায় আমরা খুবই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। আমাদের বাড়ির ছেলেমেয়েরাও তো রাস্তাঘাটে খেলে বেড়ায়। এমন ঘটনা যে আবার ঘটবে না তার কোনও নিশ্চয়তা তো নেই।’’ একই কথা বলছেন, এলাকার বাসিন্দা কুলসুম খাতুন। তিনি বলছেন, ‘‘কাজের প্রয়োজনে আমাদের অনেককেই তো এলাকার বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। অনেকে কাজগ কুড়োয়। তারা এরপর থেকে আর কাজ করতে পারবে তো? এমন ঘটনা যদি ফের ঘটে, তা হলে তো প্রাণও যেতে পারে।’’
বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরে পুলিশও বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই দেখছে। শুক্রবার সকাল থেকেই বম্ব ডিজপোজাল স্কোয়াড এলাকার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায়। কিন্তু এ দিন আর কোনও বোমা উদ্ধার হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। জগদ্দলের পাশাপাশি ভাটপাড়াতেও তল্লাশি চালানো হবে বলে জানানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পরিত্যক্ত বাড়ি, সরকারি আবাসনে তল্লাশি চালানো হবে।
পুলিশের আশ্বাসেও অবশ্য নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না এলাকার মানুষ। — নিজস্ব চিত্র