স্বস্তি: ঘরে ফিরে মায়ের হাতে খাচ্ছে কুশমণ্ডির রেজানুর হক। নিজস্ব চিত্র
কাশ্মীর থেকে ফেরা শ্রমিকদের জন্য রাজ্য সরকার এককালীন ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণায় শ্রমিকেরা খুশি হলেও স্থায়ী কাজের দাবিতে তাঁরা অনড়। শ্রমিকদের প্রশ্ন, এই টাকায় তাঁদের কতদিন চলবে। স্থায়ী কোনও কাজের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
কাশ্মীরের কুলগামে জঙ্গি-গুলিতে এ রাজ্যের পাঁচ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার জেরে সেখানে কর্মরত ১১২ জন ফিরে এসেছেন দক্ষিণ দিনাজপুরে। তবে এখানে কীভাবে কাজ জোগাড় হবে তা নিয়েই চিন্তায় তাঁরা। কুশমণ্ডির উজিল ডাঙ্গাপাড়ার বাসিন্দা শ্রমিক বাবলু হকের কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার আমাদের যে এককালীন টাকা দেবে, ভাল কথা। কিন্তু এই টাকা যথেষ্ট নয়। এই টাকা দিয়ে বড়জোর কয়েকমাস হয়তো চলবে। কিন্তু তারপর খাব কী? স্থায়ী কোনও কাজ পেলে আমাদের আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাশ্মীরে যেতে হবে না।’’
তবে বাড়ি ফেরার পর এখন রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কীভাবে সংসার চলবে সেই দুশ্চিন্তা জাঁকিয়ে বসেছে তাঁদের মনে। কাশ্মীর-ফেরত শ্রমিক পারভেজ আলি বলেন, ‘‘এখানে কাজ নেই বলেই জীবনের ঝুঁকি সত্ত্বেও কাশ্মীরে গিয়েছিলাম। এখানে কাজের সুযোগ তৈরি হলে আর আমাদের কাশ্মীর যেতে হবে না।’’ এদিকে, রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী শ্রমিকদের যাতে দ্রুত আর্থিক সাহায্য দেওয়া যায় তা নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ। পাশাপাশি, তাঁর দলের কর্মীরা যাতে প্রতিনিয়ত শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সুবিধা-অসুবিধা দেখে ব্যবস্থা নেয় তার আশ্বাসও দিয়েছেন অর্পিতা। আর্থিক সাহায্য দেওয়ার পরে শ্রমিকরা যাতে স্থায়ী কোনও কাজ পান সেই ব্যবস্থাও করা হবে বলে অর্পিতা জানিয়েছেন। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রমিকদের ৫০ হাজার করে আর্থিক সাহায্য করার কথা বলেছেন। সেই টাকা দ্রুত শ্রমিকদের দেওয়ার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে বলেছি জেলাশাসককে। এরপর শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
প্রশাসন জানিয়েছে, বিডিও অফিসগুলিতে আর্থিক সাহায্য পাওয়ার জন্য নির্ধারিত আবেদনপত্র দেওয়া শুরু হয়েছে। সেখান থেকে সেই আবেদনপত্র নিয়ে পূরণ করে সংশ্লিষ্ট বিডিও অফিসে জমা দেওয়া হলেই দ্রুত টাকা দেওয়া হবে।