ইন্দ্রমিত্র
তাঁর শেষ কাব্যগ্রন্থ ‘প্রস্থানসময় উপস্থিত’! ‘‘এর পরে আর লিখতে পারব না,’’ মেয়ে গৌরীকে বলেছিলেন অরবিন্দ গুহ। ‘এর পরে’ মানে ২০১৫। তার পরেই স্মৃতিভ্রংশে কার্যত শয্যাবন্দি হয়ে পড়েন তিনি। এ ভাবেই কেটেছে প্রায় আড়াই বছর।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রবিবার সকালে অরবিন্দবাবুকে আলিপুরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। অন্ত্রে রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছিল হঠাৎ। কিছু ক্ষণের মধ্যেই পঞ্চাশের দশকের উজ্জ্বল কবি অরবিন্দবাবুর জীবনাবসান ঘটে। বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। কেওড়াতলায় অরবিন্দবাবুর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। আছেন তাঁর স্ত্রী, রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী পূরবী গুহ এবং মেয়ে গৌরী।
জন্ম বরিশালে। সেখানে ব্রজমোহন কলেজে জীবননানন্দ দাশের সান্নিধ্যে আসেন অরবিন্দবাবু। প্রথম কাব্য ‘দক্ষিণ নায়ক’ থেকেই তাঁর মধ্যে সম্ভাবনা দেখেছিলেন জীবনানন্দ। অরবিন্দবাবু পরে সরকারি চাকরি নেন কলকাতায়। প্রখর রসবোধ আর গবেষণাধর্মিতা মিশেছিল তাঁর সৃষ্টিতে। কবিতা ছাড়াও গদ্যে তিনি সাবলীল। লিখতেন ছোটদের জন্যও। শোনা যায়, ইন্দ্রমিত্র ছদ্মনামে বিদ্যাসাগরকে নিয়ে আকরগ্রন্থ ‘করুণাসাগর বিদ্যাসাগর’ লেখার পর্বে এক বার শম্ভু মিত্রের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়েছিলেন অরবিন্দবাবু। শম্ভুবাবু প্রথমে নাকি বুঝতে পারেননি ইনিই ইন্দ্রমিত্র। তিনি ইন্দ্রমিত্রের পরামর্শ নিতে বলেন অরবিন্দবাবুকেই! ‘করুণাসাগর বিদ্যাসাগর’ ছাড়াও অরবিন্দবাবুর গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাগ্রন্থের মধ্যে আছে ‘নিপাতনে সিদ্ধ’, ‘সাজঘর’।