নাগালে পেলেও রেলের ছাঁট লোহার কারবারের ডন অমিত চৌধুরিকে এখনই পশ্চিমবঙ্গে আনতে পারছে না এই রাজ্যের পুলিশ। হাওড়ায় দু’টি খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত অমিত বর্তমানে বিহারের সীতামড়ি জেলে বন্দি। বিহারে তার বিরুদ্ধে অন্তত চারটি ফৌজদারি মামলা চলছে। তার মধ্যে দু’টি মামলার বিচারকেরা জানিয়েছেন, চার্জ গঠন না হওয়া পর্যন্ত অমিতকে অন্য রাজ্যে পাঠানো যাবে না।
অমিতের বিরুদ্ধে বিহারে চলা অন্য একটি মামলার বিচারক অবশ্য এ রাজ্যের আদালতের পাঠানো হাজিরা পরোয়ানা পেয়ে ছাঁট লোহার ওই ডনকে আজ, মঙ্গলবার হাওড়া জেলা আদালতে হাজির করানোর অনুমতি দিয়েছিলেন। সেই মতোই প্রস্তুতি নিয়েছিল হাওড়া কমিশনারেটের পুলিশ। কিন্তু অমিতের বিরুদ্ধে মামলা শোনা বিহারের অন্য আদালতগুলি সেই অনুমতি না দেওয়ায় অমিতকে এ দিন হাওড়ায় হাজির করানো যাচ্ছে না।
ছাঁট লোহার মাফিয়া বর্তমানে যেখানে বন্দি, সেই সীতামড়ি জেলের সুপার অবিনাশ কুমার সিংহ সোমবার জানান, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ বিহারে এসে অমিত চৌধুরিকে হাওড়ায় নিয়ে যেতে চেয়ে হাজিরা পরোয়ানা জমা দিয়েছিল। কিন্তু একটি আদালত অমিতকে হাওড়ায় নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিলেও অন্য দু’টি আদালত সেই অনুমতি দেয়নি। সুপার বলেন, “যতদিন না ওই দু’টি মামলার চার্জ গঠন হচ্ছে, তত দিন অমিতকে বিহারেই থাকতে হবে।” বিহার পুলিশ সূত্রের খবর, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, অমিত চৌধুরির আত্মসমর্পণের খবর পেয়ে ঝাড়খণ্ড ও অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশও সীতামড়িতে এসেছিল ওই ডনকে নিয়ে যেতে। কিন্তু তারাও যথারীতি অনুমতি পায়নি। ওই দু’টি রাজ্যেই অমিতের বিরুদ্ধে একটি করে খুনের মামলা ঝুলছে।
হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট সূত্রের খবর, অমিত চৌধুরির বিরুদ্ধে বিহারে একটি খুনের মামলা-সহ চারটি ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে আবার দু’টি মামলায় তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ১২ জুন সীতামড়ি আদালতে অমিত আত্মসমর্পণ করে দুমরা থানায় ২০০৫ সালে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে রুজু হওয়া একটি মামলার (দুমরা থানা, মামলা নম্বর: ১৮২/০৫) অভিযুক্ত হিসেবেই। অস্ত্র আইনে তার বিরুদ্ধে রুজু হওয়া অন্য মামলাটি পুপরি থানার। ১৯৯৯ সালে রুজু হওয়া ওই মামলাটিই সম্ভবত অমিত চৌধুরির বিরুদ্ধে ভারতে রুজু হওয়া প্রথম ফৌজদারি মামলা। প্রসঙ্গত, ওই পুপরি থানা এলাকার বাররি দেহট্ট গ্রামেই অমিতের বাড়ি। ওই পুপরি থানাতেই ২০০৫-এ অমিতের বিরুদ্ধে একটি খুনের মামলা রুজু করা হয়।
হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা এ দিন বলেন, “হাজিরা পরোয়ানা জমা দেওয়াই আছে। বিহারের আদালতের অনুমতি পেলে ও নির্দিষ্ট তারিখ জানার পর আমরা অমিতকে আনতে যাব।”