Panchayat Poll

বিরোধীদের কাছে আদালতের রায় নৈতিক জয়, স্বাগত জানালেন মমতাও

একই কথা শোনা গিয়েছে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গলায়। তৃণমূলের আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও আদালতের রায়কে দলের জয় হিসেবেই ব্যাখ্যা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৮ ২১:২৭
Share:

বিরোধীরা বলছে, পঞ্চায়েত মামলা নিয়ে হাইকোর্টের রায় রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের জন্য একটা বড়সড় ধাক্কা। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। গণতন্ত্রে যে কেউ আদালতে যেতে পারেন বলে শুক্রবার মন্তব্য করেছেন মমতা।

Advertisement

এ দিন হাইকোর্টে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে পঞ্চায়েত মামলার শুনানি ছিল। সেখানে নতুন করে ভোট নির্ঘণ্ট তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। পাশাপাশি আদালত কমিশনের শেষ বিজ্ঞপ্তিটিকে বাতিল করে দিয়েছে। রায় শোনার পর মমতা বলেন, ‘‘আমি চাই দ্রুত রাজ্য নির্বাচন কমিশন পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী দিন ঘোষণা করুক। অনেক দিন সময় নষ্ট হয়েছে।’’ একই কথা শোনা গিয়েছে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গলায়। তৃণমূলের আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও আদালতের রায়কে দলের জয় হিসেবেই ব্যাখ্যা করেন।

মামলার রায় ঘোষণার পরই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী আদালতের সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, “বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমরা সব সময়েই আস্থাশীল ছিলাম। আদালত আমাদের হতাশ করেনি।” কংগ্রেসের ওই সাংসদ দাবি করেন, রাজ্যে যে শাসক দলের মদতে সন্ত্রাস চলছে এবং বিরোধীরা যে সন্ত্রাসের শিকার তা আদালতও বুঝতে পেরেছে। আদালতের রায়কে বিরোধীদের নৈতিক জয় বলে বর্ণনা করেন অধীর।

Advertisement

বিজেপি হাইকোর্টের রায়ে নিজেদের জয়ই দেখছে। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যে যুক্তি হাইকোর্টে দিয়েছিলেন, তা ধোপে টেকেনি। ওঁদের যুক্তি ছিল, হাইকোর্ট এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতেই পারে না। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে স্পষ্ট হয়ে গেল, সেই যুক্তি ভিত্তিহীন ছিল। মনোনয়নের জন্য নতুন দিন ঘোষণার যে নির্দেশ হাইকোর্ট দিয়েছে, তাতেই আমাদের নৈতিক জয় হয়েছে।’’

দেখুন ভিডিও

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ও হাইকোর্টের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে রায় ঘোষণার পরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সে রায়ের অপব্যাখ্যা করছেন বলে বাবুল অভিযোগ করেছেন। নির্বাচন কতটা শান্তিপূর্ণ ভাবে হবে, তা নিয়ে অবশ্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সংশয় রয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অধীর চৌধুরীর নাম উল্লেখ করে বাবুল বলেছেন, ‘‘অধীরদা একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। মনোনয়নের দিন বাড়ানো হল মানেই কিন্তু এই নয় যে, তৃণমূল সন্ত্রাস করবে না। তাই শুধু দিন বাড়ালেই হবে না। শান্তিপূর্ণ ভাবে এবং অবাধে যাতে নির্বাচন হয়, তাও নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে।’’ তৃণমূল যদি ফের সন্ত্রাস করে, তা হলে ফের বিজেপি আদালতে যাবে বলেও বাবুল-শমীকরা এ দিন জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: এর আগে আদালতে যা ঘটেছে

সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য গোটা মামলার আগাগোড়া আইনজীবী হিসেবে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতা হাইকোর্টের এই রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সরকারের সমঝোতা থাকা উচিত নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ এবং নির্বিঘ্ন করার জন্য। কিন্তু, বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ক্ষেত্রে উল্টোটা ঘটছিল। তাই কলকাতা হাইকোর্টের রায় অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গতই হয়েছে। যে কোনও রাজনৈতিক দলেরই দাবি হওয়া উচিত যে, সবাই মনোনয়ন দাখিল করার সুযোগ পাবে। তৃণমূল ঠিক উল্টো দাবিটা করছিল। এমনকী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও সেই মতের সমর্থক ছিলেন। তিনিও বলছিলেন, মনোনয়নের জন্য আর সময় বাড়ানো উচিত নয়। হাইকোর্টের এই রায় তাই সবাইকেই শিক্ষা দিয়ে দিল।’’

আরও পড়ুন: হাইকোর্টে মুখ পুড়ল কমিশনের, ফের নিতে হবে মনোনয়ন, পিছোচ্ছে ভোট

তবে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, কমিশন বা রাজ্য সরকার এই মুহূর্তে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করবে না। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এবং তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্ট্যোপাধ্যায় দু’জনেই রমজান মাসের প্রসঙ্গ তুলেছেন। মমতার কথায়, “রমজান শুরু হবে ক’দিন পরেই। এ দিকে গরমও বাড়বে। আমাদের ৩০ শতাংশ মুসলিম ভাই বোন আছেন।” উদ্বেগ প্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement