পঞ্চায়েত ভোটে অন্যতম বিরোধী হিসেবে আলাদা দলের মতো উঠে এসেছে বিজয়ী ‘নির্দলেরা’। তাঁরা মূলত তৃণমূলেরই। দলের প্রতীক না পেয়ে বিভিন্ন জেলায় তিন স্তরেই প্রার্থী হয়েছিলেন অনেক তৃণমূল কর্মী। পশ্চিম মেদিনীপুরে দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিতেছেন এই নির্দলরাই। নজরকাড়া ফলও করেছেন অনেকে। বৃহস্পতিবার ফল প্রকাশের পরই বিজয়ী নির্দলদের দলে ফিরিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘অনেক নির্দল ইতিমধ্যেই আমাদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। অনেক বিজেপি কর্মীও আবেদন জানিয়েছেন, যাঁরা আজ জিতেছেন। আমি বলেছি, পরে কথা বলব এ সব নিয়ে।’’
গণনার দিন সকাল থেকেই তৃণমূলের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে স্পষ্ট হয়েছিল ‘নির্দল’। প্রধান বিরোধী হিসাবে বিজেপি এগোলেও তার পিছনেই বহু জায়গায় ছিলেন এই প্রার্থীরা। দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, হুগলি ও হাওড়ায় এই সমস্যা ছিল। কিন্তু মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর তা কিছু কমে যায়। কিন্তু তাতেও শেষ পর্যন্ত বিজয়ী নির্দলের সংখ্যা উদ্বেগজনক রয়ে গিয়েছে শাসকের কাছে। গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ১ হাজার ৭০০ নির্দল প্রার্থী জিতেছেন। তার মধ্যে সব থেকে বেশি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। এখানে বিজয়ী নির্দলের সংখ্যা প্রায় ২০০। পূর্ব মেদিনীপুরে প্রায় ১৫০। পূর্ব বর্ধমানে বিজেপি ও বামেদের হারিয়ে প্রধান বিরোধী হিসেবে উঠেছে নির্দলেরাই। পশ্চিম বর্ধমানের চিচুড়িয়া পঞ্চায়েতের প্রধান চামেলি কুণ্ডু হেরে গিয়েছেন দলেরই বিক্ষুব্ধ প্রার্থীর কাছে। ফল প্রকাশের পর বাড়ির দরজায় লিখে রেখেছেন, ‘দয়া করে সান্ত্বনা দিতে আসবেন না।’ জেলা পরিষদে জায়গা না পেলেও গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজয়ী নির্দলের সংখ্যা ভালই। একশোর বেশি নির্দল প্রার্থী জিতেছেন মালদহ ও নদিয়ায়। রাত পর্যন্ত গণনা চলায় নির্দলের এই তালিকা অসম্পূর্ণ।
আরও পড়ুন: গণনা চলছে, বুথে ঢুকে পড়ে মারা হল ছাপ্পা
পশ্চিম মেদিনীপুরেও নির্দলদের জয় গুরুত্বপূর্ণ। দাঁতন ২ নম্বর ব্লকের সাবড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্দলদের জয় তো বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৭ টি আসনের মধ্যে ১৪টিতে জিতেছেন তাঁরা। পঞ্চায়েত সমিতি তাঁদের হাতেই। ডেবরার ভবানীপুরেও একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্দলেরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। এখানেও পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ হেরেছেন নির্দলের কাছে। কেশপুরে ৭টি আসনে জিতেছেন নির্দলেরা। তার মধ্যে চারটি পঞ্চায়েত সমিতির আসন। পঞ্চায়েত সমিতির এক কর্মাধ্যক্ষ হেরেছেন দলেরই বিক্ষুব্ধের কাছে।