গোবিন্দপুর এবং পশ্চিম শ্যামনগর গ্রামে বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। নিজস্ব চিত্র।
এবার আর শাসক দল নয়। খোদ পুলিশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠল জয়ী বিজেপি প্রার্থীর আত্মীয়দের বাড়ি ভাঙচুর করার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের দোসা-চন্দনেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল এবং বিরোধীদের প্রাপ্ত আসনসংখ্যা সমান। সেই টাই ভেঙে বোর্ডের দখল নিতেইপুলিশ নামিয়ে এই হামলা, অভিযোগ বিজেপির। শুধু ভাঙচুর করেই ক্ষান্ত হয়নি পুলিশ, ঘরে থাকাধান-চাল বার করে তাতে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করেছে পুলিশ। অভিযোগ এমনই।
জয়নগরের দোসা-চন্দনেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে ২০টি আসন। তার মধ্যে ১০টি তৃণমূল কংগ্রেস জিতলেও, বাকি ১০ টি ভাগাভাগি করে নিয়েছে বিজেপি, এসইউসিআই এবং সিপিএম। স্থানীয় বিজেপি নেতা পার্বতী হালদার বলেন,“বিজেপি এখানে ৮টি আসন পেয়েছে। ১টি করে পেয়েছে এসইউসিআই এবং সিপিএম। ভোটের আগে থেকেই পুলিশ বিভিন্ন ভাবে আমাদের হুমকি দিচ্ছিল। এবার জয়ী বিজেপি প্রার্থীদের ভয় দেখিয়ে শাসক দলে টানতে মাঠে নেমে পড়েছে পুলিশ।”
স্থানীয়দের দাবি, শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ জয়নগর থানা থেকে প্রায় ৫০জনের বাহিনী পৌঁছয় গোবিন্দপুর এবং পশ্চিম শ্যামনগর গ্রামে। পার্বতী হালদারের অভিযোগ, “পুলিশের দলটি দু’টি ভাগে ভাগ হয়ে যায়। একটি দল শ্যামনগরে ভূতনাথ মণ্ডল ও জগবন্ধু মণ্ডলের বাড়িতে চড়াও হয়। অন্য দলটি তখন গোবিন্দপুরে উত্তম মণ্ডল এবং কর্ণ হালদারের বাড়িতে ঢোকে।”
দেখুন ভিডিয়ো
আরও পড়ুন: বিরোধীবিহীন পঞ্চায়েতে ‘আইন’ রক্ষাই মুশকিলের
আরও পড়ুন: ডোবায় পড়ে ব্যালট, বন্ধ ডাকল বিজেপি
বারুইপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্তসুপার সৈকত ঘোষ জানিয়েছেন,“ওই দু’টি গ্রামে পুলিশ কয়েকজন ফেরার অভিযুক্তের খোঁজে শনিবার তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল।তবে বাড়ি ভাঙচুরের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।”
বারুইপুর জেলা বিজেপি নেতৃত্বর দাবি, যাঁদের বাড়িতে পুলিশ চড়াও হয়, তাঁরা সবাই দলের সক্রিয় কর্মী। বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গৌতম নস্কর বলেন,“উত্তম মণ্ডলের কাকিমা টুম্পা গোবিন্দপুরে ২৬৩ নম্বর বুথ থেকে বিজপি প্রার্থী হিসাবে জিতেছেন। খালি টুম্পা নয়, পাশের আসনেও জয়ী হয়েছেন আমাদের দলের প্রার্থী। এঁদের জয়ের পিছনে এই উত্তম-জগবন্ধুদের মত কর্মীদের বড় অবদান রয়েছে। তাই বেছে বেছে ওঁদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে পুলিশ।”
জয়ী বিজেপি প্রার্থী টুম্পার অভিযোগ, পুলিশ বাড়িতে ঢুকে অ্যাসবেসটসের ছাউনি ভেঙে দেয়। এরপর ভিতরে সমস্ত জিনিসপত্র লন্ডভন্ড করে দেয়। খাবার, বাসন-কোসন সমস্ত নষ্ট করে। তারপর চালে কেরোসিন তেল ঢেলে দেয়।
ঠিক একই ভাবে হামলা চালানো হয় অন্য বিজেপি কর্মীদের বাড়িতেও। বিজেপির বারুইপুর জেলা সভপতি ত্রিদিব মণ্ডল বলেন,“টাই হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত দখল করতেই শাসক দলের হয়ে সন্ত্রাস চালাচ্ছে পুলিশের একাংশ। আমরা জয়নগর থানাতেই অভিযোগ দায়ের করেছি। জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তাদেরও আমরা গোটা বিষয়টি জানাবো।” অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এরকম অভিযোগ পেলেআমরা খতিয়ে দেখব।