ব্যালটে বুড়ো আঙুলের ছাপ।
ব্যালট পেপারে প্রার্থীর প্রতীকের পাশে প্রিসাইডিং অফিসারের সিল মারা! কোথাও আবার স্রেফ কালি মাখানো বুড়ো আঙুলের ছাপ!
গণনার সময়ে এমন ব্যালট হাতে পেয়ে চোখ কপালে ওঠে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় গণনাকেন্দ্রের এক আধিকারিকের। ‘‘দেখুন, কী কাণ্ডটা করেছে’’— বিভিন্ন দলের এজেন্টদের ব্যালটটি দেখান ওই অফিসার। হেসে ফেলেন রাজনৈতিক কর্মীরাও। একজন রসিকতা করে বলেন, ‘‘তাড়াহুড়োয় মাথার ঠিক ছিল না দেখছি।’’
নিয়ম হল, ব্যালটের একপ্রান্তে সিল মেরে, ভোটদাতার স্বাক্ষর বা আঙুলের ছাপ নেবেন প্রিসাইডিং অফিসার। তারপরে ব্যালটের একটি অংশ কেটে নিজের কাছে রেখে দিয়ে বাকি অংশটি ভোটদাতার হাতে দিয়ে দেবেন। ব্যালটের অন্য প্রান্তে থাকে প্রার্থীদের নাম-প্রতীক। প্রার্থীর হাতের আঙুলে কালি লাগিয়ে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকা একটি সিল ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেই ছাপটিই মারতে হয় পছন্দের প্রার্থীর প্রতীকের পাশে। এরপরে ব্যালট ভাঁজ করে বাক্সে ঢুকিয়ে দেন ভোটদাতা।
দেগঙ্গায় দেখা গেল, পছন্দের প্রার্থীর প্রতীকের পাশে স্বস্তিক চিহ্নের বদলে মারা রয়েছে প্রিসাইডিং অফিসারের সিল। যা কোনওমতেই ভোটদাতার হাতে যাওয়ার কথা নয়।
এক কাউন্টিং অফিসারের কথায়, ‘‘এটা তো পরিস্কার ছাপ্পা ভোট। ছাপ্পা দিতে যারা এসেছিল, তারাই স্বস্তিক চিহ্নের বদলে প্রিসাইডিং অফিসারের সিল দিয়ে এমন কাণ্ড করেছে। এতটাই আনাড়ি, জানে না কোন সিল দিয়ে ব্যালটে ছাপ মারতে হয়।’’
তবে এমন কাণ্ড শুধু দেগঙ্গায় নয়, আমডাঙা, ছোট জাগুলিয়ার বিভিন্ন গণনা কেন্দ্রে এমন দৃশ্য সামনে এসেছে। কোথাও আবার প্রিসাইডিং অফিসারের সিল ছাড়া গোটা ব্যালট জমা পড়েছে বাক্সে। কোথাও আবার প্রিসাইডিং অফিসারের সিল মারা অবস্থাতেই রয়েছে গোটা ব্যালট। নির্দিষ্ট অংশটি কেটে রাখা হয়নি।
সবই যে ছাপ্পা ভোটের নমুনা, মানছেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। কোন দলের নামের পাশে এমন বিচিত্র ছাপ দেখা গিয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তরে আর বেশি কথা বলতে চাইলেন না সরকারি কর্মীরা। তবে জানালেন, ‘‘যে দলেরই হোক, ওই সব ব্যালট বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।’’