বিক্ষোভ: জগদীপ ধনখড়কে ধিক্কার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের। শনিবার লিলুয়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
রাজ্যে কর্মসংস্থানের ‘অভাব’কে নিশানা করে শনিবার বিকালে একটি বণিকসভায় বক্তৃতা করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তার পরেই লিলুয়ায় একটি কলেজের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে দেখলেন বিক্ষোভ, কালো পতাকা এবং কালো ব্যানার— ‘রাজ্যপাল বা পদ্মপাল? রাজ্যপাল শেম শেম’।
এ দিন বিকেলে বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের সভায় ধনখড় বলেন, ‘‘ইদানীং কোনও বন্ধুর বাড়িতে নিমন্ত্রণে গেলে দেখি, তরুণেরা কেউ এখানে নেই বললেই চলে। তাঁরা রাজ্যের বাইরে কাজ করছেন।’’
এ নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজ্যপালের জানা উচিত, কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানেই এ রাজ্যে বেকারত্ব ৪০ শতাংশ কমেছে। কর্মসংস্থান না থাকলে এটা হয় না, এটুকু না বোঝার কথা নয়। আমাদের রাজ্যে অন্যান্য প্রদেশ থেকেও মানুষ আসেন কাজ করতে। বাংলা কাউকে ফেরায় না।’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘আপস-আলোচনায়’ বসার ইচ্ছা শুক্রবারই প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। এ দিন আর এক ধাপ এগিয়ে তিনি জানান, জিএসটি নিয়ে এক সময় সমস্যা হয়েছিল। তখন তাঁর ‘পুরনো বন্ধু’ অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র রাজভবনে এসে কথা বলার পরে সমাধান সূত্র বেরোয়। এর পরেই রাজ্যপালের দাবি, এই ভাবে কথা বলে নানা সমস্যা মিটিয়ে ফেলা সম্ভব। চন্দ্রিমার পাল্টা মন্তব্য, ‘‘প্রতি দিন খোঁচা মারাই যাঁর কর্মসূচি, তিনি আলোচনায় বসার আবহ কি রেখেছেন?’’
লিলুয়ায় কলেজের অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের যাওয়ার পথে স্টেশন রোডে কয়েকশো মহিলা কালো ব্যানার ও কালো পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। পরে বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘‘এখানে আসার সময় কিছু মানুষ আমাকে বিক্ষোভ দেখালেন। এ কেমন সমাজ? এ কেমন ভাবনা মানুষের? শিক্ষামন্দিরের বাইরে এ সব হওয়া উচিত নয়। রাজ্যের যে কোনও জায়গায় যখন কোনও অশান্তি হয়, প্রথম নাগরিক হিসাবে আমার হৃদয়ে চোট লাগে।’’
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিনই হাওড়া জেলা স্কুলের অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘রাজ্যপাল পদ্মপালের
মতোই আচরণ করছেন। এই নামে ডাকলেও কোনও আপত্তি নেই। ওঁর আচরণ নিত্যযাত্রীর মতো হয়ে গিয়েছে। রোজ যে ভাবে রাজভবন থেকে বেরিয়ে পড়ছেন, তাতে নিত্যযাত্রীই বলা যায়।’’