দাবিদারহীন দেহ সৎকারের পদ্ধতি বদল করে যাতে আরও উন্নত করা যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে রাজভবনকে জানিয়েছে রাজ্য। প্রতীকী ছবি।
দাবিদারহীন মৃতদেহের সৎকারের পদ্ধতিতে বদল আনতে চায় রাজ্য। তা আরও উন্নতমানের হতে চলেছে। রাজভবনকে পাঠানো রাজ্য সরকারের চিঠিতে তেমন ইঙ্গিত মিলছে।
গড়িয়া বোড়াল শ্মশান চত্বরে দাবিদারহীন বিকৃত দেহ আঁকশিতে টেনে নিয়ে যাওয়ার একটি ভিড়িয়ো ছড়িয়ে পড়া নিয়ে নানা বিভ্রান্তি এবং ক্ষোভ তৈরি হয়। টুইটে সরব হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের কাছে জানতে চান তিনি। তার পরে রাজভবনে পাঠানো স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠি পৌঁছয়। তাতে লেখা হয়েছে, ‘রাজ্য সরকার মৃতদেহের সম্মানে বিশ্বাস করে। সেই সম্মান কোনও অবস্থাতেই নষ্ট হতে দেওয়া যায় না’। একই সঙ্গে দাবিদারহীন দেহ সৎকারের পদ্ধতি বদল করে যাতে আরও উন্নত করা যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে রাজভবনকে জানিয়েছে রাজ্য। তবে এই দেহগুলির সঙ্গে করোনার সম্পর্ক নেই বলেও চিঠিতে জানানো হয়েছে।
গড়িয়া শ্মশানের বিষয়টি নিয়ে যাতে জলঘোলা না-হয়, তাই রাজভবনের সঙ্গে একাধিক বার রাজ্য যোগাযোগ করেছে বলে শুক্রবার মেদিনীপুরে দাবি করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘আমার কাছে খবর আছে, সরকারের তরফ থেকে বারবার ফোন করা হয়েছে রাজ্যপালকে, যাতে ওটা ইস্যু বানানো না-হয়। সব সামনে চলে এসেছে। তাই মুখ বন্ধের চেষ্টা হচ্ছে। এই অব্যবস্থা, অমানবিকতার পরিবর্তন দরকার আছে।’’
আরও পড়ুন: দুই করোনা আক্রান্তের শরীরে প্লাজমা থেরাপির প্রয়োগ এ বার কলকাতায়
আরও পড়ুন: ২০০ ‘সেফ-হোমে’ ১০ হাজার শ্রমিককে পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত
দিলীপের বক্তব্য কতটা যুক্তিযুক্ত, সে প্রশ্নও উঠছে। কারণ, এ দিনও রাজ্যপাল দেহের অমর্যাদা নিয়ে সরব হন। টুইটে লেখেন, ‘ওই মৃতদেহগুলি কোভিড-আক্রান্তদের কিনা সেটা বড় প্রশ্ন নয়। তা প্রমাণ সাপেক্ষ। মূল বিষয় হল, নির্মম ভাবে কি মৃতদেহ টেনে নিয়ে যাওয়া যায়! পশুদের সঙ্গেও ও রকম কেউ করে না।’ রাজ্যপালের প্রশ্ন, ‘এই ঘটনাকে খাটো করে দেখাতে যাঁরা নানান কথা বলছেন, তাঁদের জিজ্ঞেস করছি। ভেবে দেখুন তো ওঁরা কেউ যদি আপনাদের কাছের হতেন। নিজেদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করুন।’ কলকাতা পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম এবং কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমারের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন রাজ্যপাল। আর ভিডিয়োয় দেহ টেনে নিয়ে যাওয়ার ‘হৃদয়বিদারক’ দৃশ্যে জনমানসের ক্ষোভে তিনি উদ্বিগ্ন বলেও এ দিন টুইটে উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘সরকারের কাজ দেখে আমি স্তম্ভিত। আমাদের সংস্কৃতিতে মৃতদেহকে সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া হয়। ধাপার ক্ষত মেটার আগেই এই ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক।’