প্রতীকী ছবি।
শুধু দিল্লি নয়, দূষণের দাপট বাড়ছে কলকাতাতেও। তার একটা বড় কারণ ডিজেল-চালিত যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি। এই পরিপ্রেক্ষিতে ধীরে ধীরে ডিজেলের বদলে ইলেকট্রিক বাস কেনার দিকে ঝুঁকছে রাজ্য সরকার। তাই রাজ্যের পরিবহণ দফতরে একটি ‘ইলেকট্রিক বা বিদ্যুৎচালিত বাস নীতি’ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। আগামী আর্থিক বছরেই ওই নীতি চালু করার কথা ভাবছে রাজ্য।
বিদ্যুৎচালিত যানবাহন বৃদ্ধিতে উৎসাহ দিতে বছর দুয়েক আগে ‘ফেম’ (ফাস্টার অ্যাডপশন অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং অব ইলেকট্রিক ভেহিক্লস) প্রকল্প শুরু করেছে বছর দুয়েক আগে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই প্রকল্পে যে-কোনও ইলেকট্রিক গাড়ি কেনার জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে ৫০% পর্যন্ত আর্থিক সাহায্য করে তারা। ওই প্রকল্পের অধীনেই প্রথম ধাপে ১৩০টি বাস কেনার প্রস্তুতি চালাচ্ছে রাজ্য সরকার। এই বিষয়ে সবিস্তার প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করে ইতিমধ্যেই দিল্লিতে জমা দিয়েছে তারা। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ১৩০টি বাসের মধ্যে ১০০টি চালানো হবে কলকাতা ও শহরতলিতে। বাকি ৩০টি বিদ্যুৎচালিত বাস দেওয়া হবে আসানসোল-দুর্গাপুর শহর এলাকায়।
এখানেই শেষ নয়। এর বাইরেও কিছু ইলেকট্রিক বাস কেনার ইচ্ছে আছে রাজ্য সরকারের। সেই জন্য বিশ্বব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পরিবহণ দফতর। সম্প্রতি হলদিয়া থেকে ত্রিবেণী পর্যন্ত গঙ্গার দু’পারের যোগাযোগ বাড়ানোর কাজ শুরু করেছে রাজ্য। বিশ্বব্যাঙ্কের কাছ থেকে এই প্রকল্পে এক হাজার কোটি টাকা অর্থসাহায্য মিলবে। ওই অর্থের একাংশ দিয়ে ইলেকট্রিক বাস কিনতে চায় পরিবহণ দফতর। সেই জন্য বিশ্বব্যাঙ্কের কাছে অনুমতি চেয়ে ইতিমধ্যেই আবেদন জানিয়েছে তারা।
তবে ইলেকট্রিক বাস কেনার পথে হাঁটলেও ডিজেলের বিকল্প হিসেবে এখনই সিএনজি আনতে পারছে না রাজ্য সরকার। ‘‘সিএনজি বাস চালানোর পরিকাঠামো আমাদের রাজ্যে নেই। কলকাতায় একটি গ্যাস পাইপলাইন আনার কাজ চলছে। ওই কাজ যদি সফল হয়, তা হলে সিএনজি বাস কলকাতাতেও চলতে পারবে,’’ বলেন পরিবহণ দফতরের এক কর্তা। তিনি জানান, দুর্গাপুরে কিছু সিএনজি বাস চালানো হচ্ছে।
পরিবহণ দফতরের শীর্ষ কর্তারা জানাচ্ছেন, ইলেকট্রিক বাস চালানোর পাশাপাশি কলকাতায় যাবতীয় মেট্রো প্রকল্প দ্রুত শেষ করার উপরেও বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। এক কর্তার কথায়, ‘‘সব মেট্রো প্রকল্প চালু হয়ে গেলে এবং গঙ্গার দু’পাড়ের মধ্যে যোগাযোগ বাড়লে বাসের প্রয়োজন অনেকটা কমবে। তখন শুধু ছোট ছোট রুটে ইলেকট্রিক বাস চালানো হবে। তাতে দূষণ কমবে অনেকটাই।’’