Educaton

Education: পাড়ায় শিক্ষালয় আজ, কী করবে বেসরকারি স্কুল

সোমবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার প্রাক্কালে এই সব প্রশ্ন বড় হয়ে উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৫২
Share:

—ফাইল চিত্র।

এক শিক্ষায় পৃথক ফল বাঞ্ছনীয় নয় বলেই শিক্ষা শিবিরের অভিমত। সে-ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্যপুষ্ট এবং সরকার পোষিত প্রাক্‌-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ চালু করলে বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের কী হবে? বেসরকারি স্কুলগুলিও যদি একই ভাবে পড়াতে চায়, শিক্ষা দফতর তাদের সেই অনুমতি দেবে কি?

Advertisement

আজ, সোমবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার প্রাক্কালে এই সব প্রশ্ন বড় হয়ে উঠেছে। যে-হেতু পঞ্চম শ্রেণিকে প্রাথমিকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তাই কোনও কোনও ক্ষেত্রে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদেরও এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। শিক্ষা মহলের বক্তব্য, শিক্ষায় সাম্যের নীতি মানতে হলে বেসরকারি স্কুলেও পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠনের অনুরূপ ব্যবস্থা দরকার।

প্রশ্ন আরও আছে। পাড়ায় শিক্ষালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন চালু হলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়াশোনা হবে কী ভাবে? তাদের কি সেই অনলাইন-পাঠই ভরসা? দশম ও দ্বাদশের পড়ুয়াদের শিয়রে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। কী ভাবে চলবে তাদের পরীক্ষার প্রস্তুতি?

Advertisement

অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষক সংগঠনের বক্তব্য, অবিলম্বে নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খুলে ক্লাস শুরু করে দেওয়া উচিত। মিত্র ইনস্টিটিউশন ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে বলেন, “প্রাথমিকের জন্য পাড়ায় শিক্ষালয় যেমন জরুরি, একই ভাবে দরকার নবম থেকে দ্বাদশের অফলাইন ক্লাস। নবম থেকে দ্বাদশের অধিকাংশ পড়ুয়ার টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। স্কুলে পড়াশোনা শুরুর পথ প্রশস্ত।” একই সুরে যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার বলেন, “পাড়ায় শিক্ষালয় প্রাথমিকের জন্য। নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়াদের কী হবে? এদের জন্য অবিলম্বে অফলাইন ক্লাস চালু করা দরকার।”

শিক্ষক সংগঠনগুলি মনে করে, পাড়ায় শিক্ষালয় কোনও ভাবেই অফলাইন ক্লাসের বিকল্প হতে পারে না। শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “পাড়ায় শিক্ষালয় নয়, অবিলম্বে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চিরাচরিত ব্যবস্থায় শ্রেণিকক্ষে পঠনপাঠন চালু করতে হবে।” অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “পাড়ায় নয়, মাঠে নয়, ক্লাসরুমের শিক্ষা চাই। স্বাভাবিক পঠনপাঠন ফের শুরু করার জন্য শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি।”

বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের অধ্যক্ষদের প্রশ্ন, তাঁদের প্রাথমিকের পড়ুয়ারা তো সরকারি ব্যবস্থায় পাড়ায় শিক্ষালয়ের সুযোগ পাবে না। তাদের কী হবে? কলকাতার রামমোহন মিশন হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বলেন, “শিক্ষা দফতরের এই উদ্যোগ খুবই ভাল। তবে বেসরকারি স্কুলগুলো তো আর প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের নিয়ে পাড়ায় শিক্ষালয় চালু করতে পারবে না। আমরা চাই, সার্বিক ভাবেই স্কুলগুলো কোভিড বিধি মেনে খুলে দেওয়া হোক।” শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য বলেন, “বেসরকারি স্কুলের অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাই ব্যক্তিগত উদ্যোগে ছোটদের পড়াচ্ছেন। পাড়ায় কোনও ফাঁকা জায়গায় বড় অডিয়ো-ভিসুয়াল হোর্ডিংয়ের মাধ্যমেও স্কুল শিক্ষাদান করতে পারে।” ব্রততীদেবীর বক্তব্য, স্কুলের শ্রেণিকক্ষেও দ্রুত অফলাইন পড়াশোনা শুরু করে দেওয়া দরকার। রোজ নয়, আপাতত সপ্তাহের নির্দিষ্ট কিছু দিন পড়ুয়ারা স্কুলে আসুক। বাকি দিনগুলোয় চলুক অনলাইন-পাঠ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement