বাঙালি-জীবন দুর্গাপুজোকে ঘিরে বাঁচে-মরে।
অতিমারি চোখরাঙানি খানিক স্তিমিত হলেও এখনও সার্বিক মন্দার পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ব অর্থনীতি। ভারতের অর্থনীতিও তার আঁচ থেকে বাঁচতে পারেনি। চলতি অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি ছেঁটে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। এমন পরিস্থিতিতেও দুর্গাপুজোর উৎসবকে কেন্দ্র করে ‘ফুলেফেঁপে’ উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর বাংলায় পুজোর অর্থনীতির বহর ৪৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যা অর্থনীতির দিক দিয়ে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করছে বাণিজ্য মহল।
বাঙালি-জীবন দুর্গাপুজোকে ঘিরে বাঁচে-মরে। জীবনযাত্রার প্রতি স্তরে এই শারদ উৎসব এমন ভাবে প্রভাব বিস্তার করে রয়েছে যে, তার অর্থনীতির বহর কিংবা বৃদ্ধির হার হিসাব করা কঠিন। অর্থনীতিতে ‘ঝিমুনি’ থাকলেও দু’বছরের কোভিড পরিস্থিতি পেরিয়ে এ বছর পুজোর ব্যবসা ভাল হবে বলেই অনুমান করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু খুচরো বিক্রেতা থেকে শুরু করে হোটেল, রেস্তরাঁর মালিক-সহ সংশ্লিষ্ট সব মহলই জানাচ্ছে, সমস্ত প্রত্যাশা ছাপিয়ে গিয়েছে এ বারের বিক্রিবাটা!
বারোয়ারি পুজোর সংগঠন ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সভাপতি কাজল সরকার পিটিআই-কে বলেন, ‘‘২০১৯ সালের সঙ্গে যদি তুলনা করি, তা হলে এ বছর বাংলায় পুজোর অর্থনীতির বহর ৪৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে।’’ এখন জনগণের চাঁদায় পুজোর দিন ফুরিয়েছে। আজকের পুজোর অধিকাংশ খরচই আসে বিজ্ঞাপনদাতাদের ঘর থেকে। কাজল বলেন, ‘‘এ বার জেলাতেও বড় বড় পুজো হয়েছে। বিজ্ঞাপন বাবদ খরচই বেড়েছে ৪৫-৫০ শতাংশ।’’
২০১৯ সালের তুলনায় বিক্রিবাটা ৩০-৪০ শতাংশ বেড়েছে বলেই জানাচ্ছেন খুচরো বিক্রেতা এবং হোটেল ব্যবসায়ীরা। কলকাতার একটি নামী হোটেলের ম্যানেজারের কথায়, ‘‘পুজোর সময় এ বছর ৮০-৯০ শতাংশ ঘর ভর্তি ছিল আমাদের। রেস্তরাঁগুলিতেও ভীষণ ভি়ড় ছিল।’’ দক্ষিণ কলকাতার একটি শপিং মলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বলছেন, ‘‘খাবারের দোকানে প্রচুর বিক্রি হয়েছে এ বার। অন্তত ৪০ শতাংশ বেশি এবং এটা চলতে থাকবে দীপাবলি পর্যন্ত।’’
রাজ্যের জিএসটি কমিশনার খালিদ আনওয়ার বলেন, ‘‘রাজ্য পণ্য ও পরিষেবা কর থেকে আয় লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে এই পুজোর মরসুমে। আমাদের আশা, এই ধারা চলতে থাকবে।’’