ঘটনার ঘনঘটায় ‘রেসপন্স টিম’ গড়ছে কংগ্রেস

রাহুল গাঁধীর নির্দেশে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বে রদবদলের সময়ে রাজ্যে কো-অর্ডিনেশন কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যকে। রাজ্য নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সমন্বয় গড়ে তোলাই তাঁর কাজ।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:২৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন রাজ্যের কোথাও বড় ঘটনা বা দুর্ঘটনা ঘটলেই দুর্গত মানুষের কাছে পৌঁছে যেতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর জমানায় তাঁর বিরোধীরা সেই তৎপরতায় পিছিয়ে কেন, তা নিয়ে চর্চা হয়েছে বিস্তর। এ বার ঘটনা ঘটলে দ্রুত প্রতিক্রিয়ার জন্য ‘ক্রাইসিস রেসপন্স টিম’ গড়তে চলেছে প্রদেশ কংগ্রেস। তাদের কাজই হবে যথাসম্ভব দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মানুষের সঙ্গে কথা বলে দলকে প্রাথমিক রিপোর্ট দেওয়া।

Advertisement

মাঝেরহাটে সেতু ভেঙে পড়া, বাগড়ি মাকের্টে আগুন, ইসলামপুরে গুলিতে দুই ছাত্রের মৃত্যু, নাগেরবাজারে বিস্ফোরণ— সাম্প্রতিক কালে একের পর এক ঘটনা জনজীবনে প্রভাব ফেলেছে। ঘটনা ঘটলে সেখানে যাওয়াই রাজনীতিকদের দস্তুর। কিন্তু নির্দিষ্ট টিম না থাকলে কোথায় কে কী ভাবে যাবেন, সে সব নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয় বলে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব অভিজ্ঞতায় দেখেছেন। তার প্রেক্ষিতেই টিম গ়়ড়ার সিদ্ধান্ত। লক্ষ্মীপুজোর পরেই প্রদেশ নেতৃত্ব আলোচনা করে ওই টিম চূড়ান্ত করে ফেলবেন বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর।

রাহুল গাঁধীর নির্দেশে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বে রদবদলের সময়ে রাজ্যে কো-অর্ডিনেশন কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যকে। রাজ্য নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সমন্বয় গড়ে তোলাই তাঁর কাজ। প্রাথমিক আলোচনায় ঠিক হয়েছে, প্রদীপবাবুকে ক্রাইসিস রেসপন্স টিমের দায়িত্ব দিলে তা তাঁর বাকি কাজের সঙ্গে মানানসই হবে। তাঁর সঙ্গে ওই টিমে থাকতে পারেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও সাংসদ অধীর চৌধুরী এবং বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ও অন্য নেতাদের সঙ্গে প্রদীপবাবুর প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়েছে। প্রদেশ স্তরে একটি ‘কোর টিম’ রেখে জেলায় জেলায় আলাদা শাখা তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। যারা যোগাযোগ রাখবে ‘কোর টিমে’র সঙ্গে।

Advertisement

প্রদীপবাবুর কথায়, ‘‘বড় কোনও ঘটনা ঘটলে মানুষের কাছে দ্রুত পৌঁছনো জরুরি। দলের অবস্থান এবং বক্তব্য ঠিক করার জন্যও ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট দরকার হয়। তাই ক্রাইসিস রেসপন্স টিম থাকলে সুবিধা হয়।’’ সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেই জেলায় কিছু ঘটনার ক্ষেত্রে কংগ্রেস নেতাদের দ্রুত আশেপাশে দেখা যায় না। জেলায় টিম থাকলে তাদের নির্দিষ্ট দায়িত্ব থাকবে এবং ‘কোর টিমে’র যোগাযোগ থাকবে বলে প্রদেশ নেতৃত্বের যুক্তি। প্রদীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘জেলার নেতাদের বড় ভূমিকা আছে এ ক্ষেত্রে।’’

গত কয়েক বছরে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-এর কলকাতা জেলায় এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের যুব লিগে এমন ‘অ্যাকশন টিমে’র পরিকল্পনা হয়েছিল। সিপিএমে অবশ্য সাংগঠনিক ভাবেই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচির জন্য পৃথক সাব কমিটি আছে। কিন্তু তাতেও চোখে পড়ার মতো তৎপরতা অধরাই! অথচ মমতা এত সব আয়োজন ছাড়াই ঘটনাস্থলে পৌঁছতেন। অন্য দলের নেতারা অবশ্য বলেন, তৃণমূলে মমতাই সব, যা তাঁদের দলে সম্ভব নয়। এ বার টিম গড়ে কী হয়, পরীক্ষা বিধান ভবনের!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement