প্রতীকী ছবি।
এক বছরের মধ্যেই দ্বিতীয় বার নতুন প্রদেশ সভাপতি পেতে পারে বাংলার কংগ্রেস। বাংলার জন্য দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, দুই পদেই নতুন নিয়োগের কথা এআইসিসি-র ভাবনায় রয়েছে— এমনই ইঙ্গিত কংগ্রেস সূত্রে। বিধানসভা ভোটের ফল পর্যালোচনার জন্য গঠিত এআইসিসি-র কমিটিও সাংগঠনিক পুনর্বিন্যাসের কথা বলেছিল।
অতি সম্প্রতি দক্ষিণ ভারতের দুই রাজ্য কেরল ও তেলঙ্গানায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে বদল এনেছে দলের হাইকম্যান্ড। আগামী লোকসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ রেখে বিভিন্ন রাজ্যেই সাংগঠনিক পুনর্গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে এআইসিসি-র। সেই পথ ধরেই পরিবর্তন আসতে পারে বাংলায়। রাজ্যে এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক জিতিন প্রসাদ বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় ওই পদে নতুন মুখ আনতেই হবে হাইকম্যান্ডকে। সূত্রের খবর, সলমন খুরশিদ, অখিলেশ সিংহের মতো নেতাদের নাম রয়েছে সম্ভাব্য নতুন পর্যবেক্ষকের তালিকায়। সেই সঙ্গেই প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ পদে বদল হতে পারে। তবে ওই পদে কেরলের কে সুধাকরনের মতো বর্ষীয়ান কোনও নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, নাকি তেলঙ্গানার অনুমুলা রেবন্ত রেড্ডির মতো পরবর্তী প্রজন্মের কাউকে আনা হবে, তা এখনও চূড়ান্ত নয়।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীন গত বছর জুলাইয়ে প্রয়াত হন সোমেন মিত্র। তার পরে সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় বারের জন্য অধীর চৌধুরীকে প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব দেয় এআইসিসি। কংগ্রেসের অন্দরের আলোচনা বলছে, রাজ্যে বিধানসভা ভোটে বেনজির বিপর্যয়ের পরে সংগঠনে কিছু রদবদল দরকার। বিধানসভার ভোটের পরে যা পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দিল্লির দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি নিজের লোকসভা কেন্দ্র বহরমপুরে এখন বাড়তি নজর দিতে হচ্ছে অধীরবাবুকে। বিধানসভা ভোটের ফল পর্যালোচনার জন্য গঠিত মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চহ্বাণের নেতৃত্বাধীন কমিটিও সাংগঠনিক রদবদল এবং পূর্ণ সময়ের সভাপতির কথা বলেছে। এই প্রেক্ষিতেই প্রদেশ সভাপতি পদে পরিবর্তনের ভাবনা উঠে এসেছে বলে দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত। তবে তেমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীরবাবুর মতামত নিয়েই এগোবে এআইসিসি।
বাংলায় শূন্য হয়ে যাওয়ার পরে তুলনামূলক ভাবে নবীন কোনও নেতাকে দলের ভার দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পথে যাওয়ার ভাবনা রয়েছে কংগ্রেসের অন্দরে। আবার প্রবীণ কোনও নেতার অভিজ্ঞতায় ভরসা রেখে তাঁর সঙ্গে একগুচ্ছ কার্যকরী সভাপতি ঠিক করে দেওয়াও হতে পারে। দলের এক নেতার মন্তব্য, ‘‘সভাপতি যে-ই হোন, কাজ তো এখন অনেকটা শবদেহ পাহারা দেওয়ার মতো! তবে সভাপতি পরিবর্তনই সমাধান নয়। সংগঠন এবং দলের কাজকর্ম পরিচালনা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে আমাদের।’’ অধীরবাবু অবশ্য ঘনিষ্ঠ মহলে এবং কখনও কখনও প্রকাশ্যেও বলে রেখেছেন, লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা বা প্রদেশ সভাপতি পদের জন্য তিনি কোনও দিন হাইকম্যান্ডের কাছে দরবার করেননি। সনিয়া, রাহুল গাঁধীরা যখন যা দায়িত্ব দিয়েছেন, তা পালন করেছেন। ভবিষ্যতেও তাঁদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।