BJP MPs Arrest in Delhi

মমতার সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে শাহের দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেফতার বঙ্গের বিজেপি সাংসদেরা

নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে শুক্রবার সকালে নয়াদিল্লির হেইলি রোডের বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য, খগেন মুর্মুরা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:২২
Share:

দিল্লির বঙ্গভবনের সামনে থেকে গ্রেফতার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার-সহ বঙ্গের কয়েক জন বিজেপি সাংসদ। ছবি: সংগৃহীত।

নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন বাংলার বিজেপি সাংসদেরা। ঘটনাচক্রে, দিল্লির পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন। অর্থাৎ, অমিত শাহের অধীন। সে অর্থে বিজেপি সরকারের পুলিশের হাতেই গ্রেফতার হয়েছেন বাংলার বিজেপি সাংসদেরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবারই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল করার রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই রায়ের পরে গোটা ঘটনাপ্রবাহের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে ‘দায়ী’ করতে শুরু করেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। রাজ্যের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলে নয়াদিল্লিতে বঙ্গভবনের সামনে বিজেপির সাংসদেরা শুক্রবার বিক্ষোভ দেখাবেন, তা দিন দুয়েক আগেই ঘোষিত হয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের যে রায় এসেছে, তার প্রেক্ষিতে বিক্ষোভের মূল বিষয় হয়ে ওঠে পশ্চিমবঙ্গর শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি।

বঙ্গভবনের সামনে ওই বিক্ষোভে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারও। যিনি আবার কেন্দ্রীয় সরকারে শাহের সহকর্মীও। ছিলেন সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য, খগেন মুর্মুরা। তাঁদের সকলকেই গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। সূত্রের খবর, তাঁদের দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার এক অফিসারের দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, বিক্ষোভ এবং গ্রেফতারির আগে দিল্লিতে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন সুকান্ত। সেখানে তাঁর সঙ্গেই ছিলেন বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র। তাঁরা জানিয়ে দেন, এর পরে নিয়োগ দুর্নীতিতে মমতা জেলে যাবেন! হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌটালার প্রসঙ্গ টেনে এনে শিক্ষায় দুর্নীতির জন্য কী হতে পারে, তা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন সম্বিতেরা। সুকান্ত-সম্বিতের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়টিকে তাঁরা রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে ‘বিষয়’ তৈরি করার দিকে এগোচ্ছেন। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে দুপুরে এক সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেছিলেন, “যদি পারো, আমায় ধরো।” মমতার সেই মন্তব্যের রেশ টেনেই শুক্রবার দিল্লিতে সুকান্ত বলেন, “আসলে উনি দেওয়াল লিখন পড়তে পেরেছেন। বিজেপি কিছু করবে না। ভারতের বিচারব্যবস্থাই ওঁকে জেলে পাঠাবে।” সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অংশ পড়ে শুনিয়ে সম্বিত বোঝানোর চেষ্টা করেন, কী ভাবে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির প্রসঙ্গ তুলে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “পার্থ গ্রেফতার হলে মমতা নন কেন?” সেই সূত্রেই বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’য় ফাটল উস্কে দেওয়ার চেষ্টাও করেছেন সম্বিত। বলেছেন, “বিজেপি-শাসিত কোনও রাজ্য নিয়ে কোনও জেলা আদালত এই ভয়ঙ্কর পর্যবেক্ষণের কথা জানালে রাহুল গান্ধী কী করতেন? বলতেন, গণতন্ত্র শেষ হয়ে গিয়েছে! এটা তো সুপ্রিম কোর্ট। এখন তিনি কোথায়?”

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলে থাকা প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বৃহস্পতিবার বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। ঘোষিত রায়ে বলা হয়েছে, ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্য’ বাছাই করা সম্ভব হয়নি। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। যাঁরা অন্য সরকারি চাকরি ছেড়ে ২০১৬ সালের এসএসসি-র মাধ্যমে স্কুলের চাকরিতে যোগদান করেছিলেন, তাঁরা চাইলে পুরনো কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement