(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে শুল্কযুদ্ধ যেন থামছেই না। প্রতি দিনই এই যুদ্ধ নতুন মোড় নিচ্ছে। কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলছে না। ওয়াশিংটন শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি করলে, বেজিংও পাল্টা শুল্ক চাপাচ্ছে। একই সঙ্গে চলছে বাগ্যুদ্ধও। রবিবার আবার এক বার ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনকে সতর্ক করল শি জিনপিঙের সরকার। চিনের বাণিজ্য মন্ত্রক জানায়, দু’-একটি পণ্যে নয়, আমেরিকার উচিত তাদের নতুন শুল্কনীতি থেকে পুরোপুরি সরে আসা। বাড়তি শুল্ক ‘সম্পূর্ণরূপে বাতিল’ করার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
শনিবার (ভারতীয় সময়) মার্কিন প্রশাসন জানায়, আমেরিকার নয়া শুল্কনীতি থেকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে মোবাইল এবং কম্পিউটারকে। আমেরিকার শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা দফতরের নতুন গাইডলাইনে বলা হয়েছে, স্মার্টফোন এবং কম্পিউটারের উপর নয়া শুল্কনীতি কার্যকর হবে না। চিন মনে করে শুধু স্মার্টফোন এবং কম্পিউটার নয়, পারস্পরিক শুল্কের ভুল অনুশীলন সম্পূর্ণরূপে বাতিল করা উচিত আমেরিকার। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, চিনের বাণিজ্য মন্ত্রকের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘ভুল সংশোধনের জন্য একটি পদক্ষেপ করার জন্য আমরা আমেরিকাকে স্বাগত জানাই।’’ বাণিজ্য মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক ছাড়ের যে ঘোষণা করেছে, তা মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
তবে আমেরিকার বিরুদ্ধে শুল্কযুদ্ধে চিন যে পিছু হটবে না, তা আরও এক বার বুঝিয়ে দিল বেজিং। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়ান জানান, তাঁর দেশ বসে থাকবে না। চিনের নাগরিকদের বৈধ অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে দেবে না তাঁর প্রশাসন।
ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে চিনের সঙ্গে আমেরিকার কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানির দিকে। দু’দেশের শুল্ক সংঘাতের আবহে তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের শুরুর দিকেই চিনা পণ্যের উপর ২০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিল আমেরিকা। চিনা পণ্যের উপরেও ৩৪ শতাংশ শুল্ক চাপান ট্রাম্প। চিন পাল্টা শুল্ক চাপালে ট্রাম্প আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন এবং মোট শুল্কের পরিমাণ হয় ৮৪ শতাংশ। তার সঙ্গে পূর্বের ২০ শতাংশ শুল্ক যুক্ত করলে মোট শুল্ক দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে। থেমে থাকেননি ট্রাম্পও। তিনি দফায় দফায় চিনা পণ্যের উপর শুল্ক বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন। ১২৫ শতাংশ করা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার সেই শুল্কের পরিমাণ বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করা হয়। শুক্রবার শুল্ক বৃদ্ধি করে পাল্টা জবাব দেয় বেজিংও। শুক্রবার তারা ঘোষণা করে, ৮৪ নয়, এ বার থেকে মার্কিন পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ধার্য করা হচ্ছে। একই সঙ্গে শেষ পর্যন্ত লড়াই করার কথাও শোনা যাচ্ছে চিন প্রশাসনের গলায়।