দিলীপ ঘোষ। ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে দিল্লিতে এআইসিসি নেতা প্রমোদ তিওয়ারি— সকলের প্রতিবাদের পরেও নিজের ‘এনকাউন্টার’ তত্ত্বে অনড় রইলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি শুক্রবার বলেন, ‘‘কোন রাজ্যের কোন সরকার এনকাউন্টার করেনি? পশ্চিমবঙ্গে হয়নি? কিষেণজিকে তৃণমূল এনকাউন্টার করেনি? জঙ্গল থেকে তুলে নিয়ে এসে হত্যা করা হয়েছে। এনকাউন্টার করতে হলে অবশ্যই করব। গুলি আমরা গুনব। আর লাশ তোমরা গুনবে। বলে যাচ্ছি আমি।’’ তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’ ও পুলিশি ‘নির্যাতনে’র প্রতিবাদে গত সোমবার থেকে কাল, রবিবার পর্যন্ত জেলায় জেলায় প্রশাসনিক দফতরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। এ দিন মেদিনীপুর শহরের এলআইসি মোড়ে বিক্ষোভে যোগ দিয়ে দিলীপবাবু ওই মন্তব্য করেন।
রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বলেন, ‘‘কিষেণজি যখন মারা যান, তখন জঙ্গলমহলে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল। এনকাউন্টারে তাঁর মৃত্যু হয়নি। এখন মাও-বিজেপি- সিপিএম-কংগ্রেস এক হয়েছে। তা উনি এ সব বলছেন। আর এনকাউন্টার পশ্চিমবঙ্গে হয় না। গুজরাতে হয়। এ রাজ্যে মানুষকে পরিষেবা দিয়ে হৃদয় দিয়ে জিততে হয়।’’
বৃহস্পতিবার সিউড়ি প্রশাসনিক ভবনের সামনে রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুও বলেছিলেন, ‘‘এখানে এক জনের নাম খুব শোনা যাচ্ছে। দেখতে মহিষাসুরের মতো। বিজেপি ক্ষমতায় এলে ৭২ ঘণ্টা সময় দেবে মহিষাসুরকে। হয় যা যা দোষ করেছ, কবুল কর, না হয় এনকাউন্টারের সামনাসামনি হও। যেমন হচ্ছে যোগী রাজ্যে।’’ দলীয় সূত্রের খবর, সরাসরি না বললেও সায়ন্তনের নিশানায় ছিলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলই। ওই ‘উস্কানিমূলক’ মন্তব্যের জন্য সায়ন্তনের বিরুদ্ধে এ দিন স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা করেছে পুলিশ।
জেলার পুলিশ সুপার কুনাল অগ্রবাল ছুটিতে রয়েছেন। প্রকাশ্যে এ নিয়ে মন্তব্য করেননি কোনও পুলিশকর্তা। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘সায়ন্তনবাবুর বক্তব্যে উস্কানি ছিল বলে মামলা হয়েছে।’’ আর সায়ন্তনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘পুলিশকে বোমা মারার কথা বললেও অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। আমার বিরুদ্ধে হয়েছে। গণতন্ত্র ফেরানোর জন্য আমাদের লড়াই যত এগোবে, তত এ ধরনের অগণতান্ত্রিক মামলা বাড়বে।’’