BJP

BJP: চার কেন্দ্রে প্রচারে ‘ধাক্কা’ খাওয়া বিজেপি

বিধানসভা নির্বাচনের পরে সদ্য তিন কেন্দ্রের ভোটেও পরাজয় দলের কর্মীদের মনোবলে ফের ধাক্কা দিয়েছে বলে বিজেপি-র অন্দরে চর্চা আছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২১ ০৭:৫৫
Share:

প্রতীকী চিত্র।

ভবানীপুর, শমসেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুর—এই তিন বিধানসভা কেন্দ্রে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারার পরে দিনহাটা, শান্তিপুর, গোসাবা এবং খড়দহের উপনির্বাচনে আবার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বিজেপি। দুর্গাপুজো মিটতে না মিটতেই রবিবার থেকে ফের ওই চার কেন্দ্রে প্রচারে নেমে পড়েছে তারা। বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে তৃণমূল এবং অন্যান্য দল থেকে বিজেপিমুখী স্রোত দেখা গিয়েছিল। কিন্তু গত মে মাসে ভোটে বিজেপির পরাজয়ের পর থেকে সেই স্রোত উল্টো মুখে বইতে শুরু করেছে। বিজেপি ছেড়ে নেতা এবং কর্মীদের অনেকেই এখন চলে যাচ্ছেন তৃণমূলে। এই পরিস্থিতিতে চার কেন্দ্রে আগামী ৩০ অক্টোবরের উপনির্বাচনে দলের ফল কেমন হবে, তা নিয়ে সংশয়ী বিজেপির একাংশ। দলের ওই অংশ মনে করছে, ভোটে জিততে না পারলেও অন্তত পরাজয়ের ব্যবধান কমানো গেলে মুখরক্ষা হবে।

Advertisement

বিধানসভা নির্বাচনের পরে সদ্য তিন কেন্দ্রের ভোটেও পরাজয় দলের কর্মীদের মনোবলে ফের ধাক্কা দিয়েছে বলে বিজেপি-র অন্দরে চর্চা আছে। তার উপরে চার কেন্দ্রের মধ্যে খড়দহের উপনির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সব্যসাচী দত্ত তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন পুজোর ঠিক আগে। গত বিধানসভা ভোটে দিনহাটায় ৫৭ ভোটে এবং শান্তিপুরে প্রায় ১৬ হাজার ভোটে জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু তার পরে ওই দুই জায়গা থেকেই বিজেপি কর্মীদের অনেকে তৃণমূলে চলে গিয়েছেন। বিজেপির তরফে শান্তিপুরের ভোটের পর্যবেক্ষক, সাংসদ জগন্নাথ সরকারের সঙ্গে ওই কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী নিরঞ্জন বিশ্বাসের সম্পর্ক খুব মধুর নয় বলেও দলের একাংশের দাবি। জগন্নাথকে নিরঞ্জনের প্রচারে দেখাও যাচ্ছে কম। গোসাবা এবং খড়দহে গত বিধানসভা ভোটে বিজেপি তৃণমূলের কাছে হেরেছিল যথাক্রমে প্রায় ২৩ হাজার এবং ২৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে। মাত্র পাঁচ মাস পরের উপনির্বাচনে ওই ব্যবধান ঘোচানো যাবে কি না, তা নিয়েও চিন্তিত বিজেপি নেতৃত্ব।

প্রকাশ্যে অবশ্য বিজেপি নেতারা ভাঙতে রাজি নন। যেমন—দিনহাটার ভোটের অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত নেত্রী তথা বিধায়ক মালতী রাভা রায় বলেন, ‘‘মানুষ ভোট দিতে পারলে এই কেন্দ্রে আমরা বিপুল ভোটে জিতব। তৃণমূল সন্ত্রাস করছে। কারণ ওরা জানে, জিতবে না।’’ বিজেপির তরফে শান্তিপুরের ভোটের পর্যবেক্ষক জগন্নাথ বলেন, ‘‘আমাদের উপনির্বাচনের প্রার্থী গত বারের চেয়ে দ্বিগুণ ভোটে জিতবেন।’’ প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা ভোটে শান্তিপুরে বিজেপির প্রার্থী হয়ে জিতেছিলেন জগন্নাথই। বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের মতে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অশান্তির বাতাবরণকে শান্তিপুরে ভোটের মেরুকরণে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। গোসাবার ভোটে বিজেপির তরফে অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর দাবি, ‘‘ওখানে তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব আছে। তার ফায়দা আমরা পাব। তবে মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন, এটা নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে।’’ খড়দহে বিজেপি ভোটের পর্যবেক্ষক করেছে সাংসদ তথা দলের রাজ্য সহ-সভাপতি অর্জুন সিংহকে। তিনিও তৃণমূলের ‘গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে’ ভরসা রাখছেন। অর্জুন বলেন, ‘‘পুজো শেষ। এ বার জোরালো ‌প্রচার শুরু হবে। ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব আছে। তার ফলে আমরা সুবিধা পাব।’’

Advertisement

তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষের অবশ্য মন্তব্য, ‘‘চার-শূন্য ফলে তৃণমূল জিতবে। তার কারণ খুব স্পষ্ট। চারটি কেন্দ্রেই রান্নার গ্যাস, পেট্রোল-ডিজ়েলের দাম বেড়েছে। আদি আর নব্য বিজেপির লড়াইও বেড়েছে। আর চারটি কেন্দ্রেই মানুষ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী পেয়েছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement