রাজ্যের স্কুলে বাংলা ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার নীতিগত সিদ্ধান্ত ঘোষণা হলেও কী ভাবে তা কার্যকর করা যাবে, তা স্পষ্ট নয়। খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মঙ্গলবার বলেন, ‘‘সবই ভাবনাচিন্তা ও আলোচনার স্তরে রয়েছে।’’
মাধ্যমিক বোর্ডের স্কুলগুলিতে বাংলা ভাষা আবশ্যিক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু সিবিএসই বা আইসিএসই বোর্ডের স্কুলেও কি তা বাধ্যতামূলক হবে? পার্থবাবুর বক্তব্য, ‘‘বোর্ডগুলির সঙ্গে কথা বলা হবে। সমঝোতার ভিত্তিতেই এগোনো হবে। তা সত্ত্বেও অসুবিধা হলে মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি দেখবেন।’’ তিনি বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশনামাতেই কাজ হয়ে গেলে নতুন করে আইন আনার প্রয়োজন হবে বলে মনে হয় না।’’
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘‘এই ত্রিভাষা নীতির ফলে ছাত্ররা আন্তর্জাতিক ও জাতীয় ভাষা শিক্ষার পাশাপাশি নিজেদের আঞ্চলিক স্তরের ভাষাও শিখবে এবং লাভবান হবে।’’
আইসিএসই, সিবিএসই বোর্ডে সারা দেশেই অভিন্ন পাঠ্যক্রম। রাজ্যভিত্তিক আলাদা আলাদা আঞ্চলিক ভাষা পড়ানোর কী বন্দোবস্ত স্কুলগুলিতে রয়েছে? শিক্ষা দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘রাজ্য অনুযায়ী আঞ্চলিক ভাষা পড়ানোর বন্দোবস্ত অন্য বোর্ডের স্কুলগুলিতে রয়েছে। অন্য বোর্ডের অনেক স্কুলই এ রাজ্যে বাংলা পড়ায়।’’ আইএসসিই বোর্ডের এগ্জিকিউটিভ কমিটির সদস্য তথা এ রাজ্যের আইএসসিই স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নবারুণ দে জানান, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসে এমনিতেই বাংলা পড়ানো হয়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রাথমিকে পড়ুয়াদের ওপরে জোর করে এটা চাপিয়ে দিলে বাংলা যাদের মাতৃভাষা নয়, তাদের ওপরে চাপ পড়বে।’’ তাঁর মতে, কর্নাটকে স্থানীয় সংস্কৃতি শেখানোর জন্য প্রতি সপ্তাহে স্পেশাল ক্লাস বাধ্যতামূলক। সেভাবে এ রাজ্যেও করা যেতে পারে।
সিবিএসই বোর্ডের অবশ্য দাবি, রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তি না পেলে তারা সরকারি ভাবে মন্তব্য করবে না। সিবিএসই-র এক কর্তার কথায়, ‘‘এর ফলে যারা বাংলার বদলে পছন্দমাফিক অন্য ভাষা নিয়ে পড়তে চায়, তারা বঞ্চিত হবে।’’ সিবিএসই পরিচালিত গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের অধ্যক্ষ ইন্দ্রাণী মিত্র বলেন, ‘‘প্রাথমিকের শিশুদের ওপরে নতুন করে একটি ভাষা চাপিয়ে দিলে বাড়তি চাপ তো পড়বেই। তবে রাজ্য সরকার এখনও কিছু জানায়নি। জানালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’