প্রতীকী ছবি।
কাটমানির সুতোয় এ যাবৎ জড়িয়ে ছিল পুরসভা এবং পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা। এ বার সেই তালিকায় দোসর হলেন
সরকারি আমলাও।
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির বিডিও-র বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ এবং কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ আনলেন জলঙ্গি পঞ্চায়েত সমিতির ২৫ জন তৃণমূল সদস্য। বিডিও একা নন, তাঁর সঙ্গেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে জলঙ্গি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধেও।
রাস্তা তৈরি, মাটির স্টেডিয়াম, কমিউনিটি সেন্টার গড়ার জন্য ৩৬টি প্রকল্পে দরপত্র ডাকা নিয়ে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যাঁর বিরুদ্ধে, জলঙ্গির সেই বিডিও কৌস্তবকান্তি দাস বলছেন, ‘‘কিছু ক্ষেত্রে ভুয়ো কাগজপত্র জমা দেওয়ায় ভুল একটা হয়েছে ঠিকই। তবে যাঁরা অভিযোগ করছেন তাঁরাও ধোয়া তুলসী পাতা নন।’’
অভিযুক্ত ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের শুক্লা সরকার অবশ্য, সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়ে বলছেন, ‘‘এটা নিছকই দলীয় কোন্দল।’’ অভিযোগে যে গড়মিল রয়েছে, তা অবশ্য জেলার শীর্ষ কর্তারা বকলমে মেনে নিয়েছেন। মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সুদীপ্ত পোড়েল কোনও রাখঢাক না রেখেই বলছেন, ‘‘টেন্ডার ডাকা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় বিডিওকে নিয়ম মেনে
নতুন করে টেন্ডার ডাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
সীমান্ত ঘেঁষা জলঙ্গির বিভিন্ন এলাকায় একাধিক গ্রামীণ রাস্তা পিচ এবং ঢালাই করার জন্য ওই দরপত্র ডাকা হয়েছিল। ডাক দেওয়া হয়েছিল এলাকায় একটি মাটির স্টেডিয়াম এবং কমিউনিটি হল গড়ার জন্যও। কিন্তু তৃণমূলের দখলে থাকা পঞ্চায়েত সমিতির ২৯ জন সদস্যের মধ্যে ২৫ জনই তা নিয়ে আপত্তি তোলেন। তাঁদের দাবি, জালিয়াতি করেই ওই দরপত্র ডাকা হয়েছে। জলঙ্গি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘‘বিডিও এবং সভাপতি গোপনে ওই টেন্ডার ডেকেছেন। আমরা পুরোপুরি অন্ধকারে। অর্থ কমিটি বা স্থায়ী সমিতিতে কোনও রকম আলোচনাই হয়নি এ ব্যাপারে। আমরা মনে করছি কাটমানি নিয়েই নিজেদের পছন্দের লোককে কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে।’’ এ অভিযোগই তাঁরা লিখিত ভাবে জমা দিয়েছেন জেলা গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক সচ্চিদানন্দ বন্দোপাধ্যায়ের কাছে।
সচ্চিদানন্দবাবু বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। তার মধ্যে কিছু বেনিয়মের ইঙ্গিত রয়েছে। আমরা নতুন করে টেন্ডার ডাকার নির্দেশ দিয়েছি।’’