প্রতীকী ছবি
সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে পুরসভার প্রতিটি এলাকায়। কেন্দ্রীয় সরকারের দু’টি কারখানার প্রায় ৪০ জন কর্মী ইতিমধ্যেই সংক্রমিত। তার পরেও ১০০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কারখানা চালানোর ফতোয়া জারি রয়েছে সেখানে। শেষ পর্যন্ত সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে লকডাউনেরই পথে হাঁটছে উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভা। আগামী সোমবার থেকে জুলাই মাসের শেষ দিন পর্যন্ত পূর্ণ লকডাউনের নির্দেশিকা জারি করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার ইছাপুর রাইফেল কারখানা এবং ইছাপুর মেটাল ও স্টিল কারখানা কর্তৃপক্ষকেও লকডাউনের নোটিস পাঠানো হয়েছে। শনিবার এমনিতেই লকডাউন। রবিবার বাদ দিয়ে সোমবার থেকে শুরু হবে টানা লকডাউন।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১০ দিনে পলতা এবং ইছাপুরে সংক্রমণের হার লাগাতার বেড়েছে। ২৩টি ওয়ার্ডেই ছড়িয়েছে সংক্রমণ। এই অবস্থায় পুলিশ কমিশনারেট পরীক্ষামূলক ভাবে ওই পুর এলাকায় বেলা ১২টার পর থেকে সময়ভিত্তিক লকডাউন চালু করেছিল। ছাড় দেওয়া হয়েছিল সকালের বাজারে। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। দেখা যায়, সব থেকে বেশি ভিড় হচ্ছে সকালের বাজারেই। তুলনায় মানুষ সন্ধ্যার বাজারে কম ভিড় করছেন। দূরত্ব-বিধি শিকেয় তুলে বাজারে যে ভাবে গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে কেনাকাটা চলছে, তাতে সংক্রমণ ঠেকানোর অন্য কোনও উপায় দেখছে না পুরসভা।
শুক্রবার বিকেলে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসেন পুর কর্তৃপক্ষ। ছিলেন পুলিশ এবং স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরাও। সেখানেই সকলে মেনে নেন যে, টানা লকডাউন ছাড়া উপায় নেই। পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান মলয় ঘোষ জানান, ২৩টি ওয়ার্ডেই চলবে পূর্ণ লকডাউন। সোমবার সকাল ৬টায় শুরু হবে। চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত। পরে পর্যালোচনা করে প্রয়োজনে লকডাউন আরও বাড়ানো হতে পারে।
মলয়বাবু বলেন, “ইছাপুর রাইফেল কারখানা এবং মেটাল ও স্টিল কারখানা কর্তৃপক্ষকে লকডাউনের নোটিস পাঠানো হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যসচিবের জারি করা নির্দেশিকা অনুযায়ী, স্থানীয় প্রশাসনের লকডাউনের সিদ্ধান্ত সব সংস্থাকেই মানতে হবে। তা ছাড়া, ওই দু’টি কারখানার অনেকেই সংক্রমিত। তার মধ্যে বেশ কয়েক জন এই পুরসভা এলাকার।”
ওই দুই কারখানার প্রায় ৩২ জন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। গত এক সপ্তাহে দু’জায়গাতেই সংক্রমিতের সংখ্যা আরও বেড়েছে। বৃদ্ধির হার বেশি মেটাল ও স্টিল কারখানায়। কর্মচারী ইউনিয়নগুলি কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার কর্মীদের হাজিরার সংখ্যা কমানোর আবেদন জানালেও তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ। ইউনিয়নগুলির তরফে পুর কর্তৃপক্ষ এবং জেলাশাসককেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত লকডাউনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন ওই দুই
কারখানার কর্মীরা। এতে কিছুটা আশঙ্কামুক্ত হতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।