(বাঁ দিকে) অর্জুন সিংহ, সোমনাথ শ্যাম (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
ব্যারাকপুরে তৃণমূলের সমস্যা যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের প্রস্তুতি সভাতেও সেই দ্বন্দ্বের রেশ চোখে পড়ল। ভাটপাড়ায় তৃণমূলকর্মী ভিকি যাদব খুনের ঘটনায় ২১ ডিসেম্বর সাংসদ অর্জুন সিংহের ভাইপো সঞ্জীব সিংহ গ্রেফতার হওয়ার পর ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের রাজনৈতিক উত্তাপ কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। পরস্পরের বিরুদ্ধে বিবৃতি ও পাল্টা বিবৃতি দিচ্ছেন সাংসদ অর্জুন থেকে বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। সেই আবহেই শনিবার মধ্যমগ্রামে জেলা তৃণমূলের তরফে এক বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়। আগামী ২৮ ডিসেম্বর জেলারই চাকলায় আসার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। ওই দিন দেগঙ্গা বিধানসভা এলাকায় একটি কর্মীসভাও করবেন তিনি। সেই উপলক্ষে মধ্যমগ্রামের দফতরে প্রস্তুতি বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন সাংসদ অর্জুন। বৈঠকে কিছুটা দেরি আসেন জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ। তার কিছু পরেই বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান ব্যারাকপুরের সাংসদ। বৈঠকে থাকা তৃণমূল নেতারা তাঁর কাছে চলে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্য কাজ রয়েছে।
বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন অর্জুন। সেখানেই তাঁকে ব্যারাকপুরের দলীয় সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি খড়্গহস্ত হন ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার বিরুদ্ধে। প্রশ্ন তোলেন জেলা সভাপতি তাপস রায়ের ভূমিকা নিয়েও। অর্জুন বলেন, ‘‘যদি সাংগঠনিক জেলা বিষয়টা দেখতে তা হলে সমস্যা এত দূর গড়াতই না। জেলা সভাপতি এই সমস্যার সমাধান করতে পারবেন না, কারণ বিষয়টা আর তাঁর আওতার মধ্যে নেই। এ বিষয়ে যা করার শীর্ষ নেতৃত্ব করবেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি বিজেপির সাংসদ ছিলাম। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে দলে ফিরিয়ে এনেছেন। ওঁর উপর আমার আস্থা আছে। কিন্তু কেউ যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ করেন, তা হলে আমার কিছু বলার নেই।’’
এর পরেই নাম না করে সোমনাথকে চ্যালেঞ্জ করে অর্জুন বলেন, ‘‘দলের পতাকা ছাড়া আমার সঙ্গে লড়তে বলুন। তা হলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে, মানুষ কার সঙ্গে আছে!’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কার নির্দেশে এমন করা হচ্ছে আমি তা-ও জানি।’’ রাজ্য রাজনীতির কারবারিদের মতে, অর্জুন এমন কথা বলে সোমনাথের পাশাপাশি, নাম না করে সেচমন্ত্রী তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে ব্যারাকপুরে সাংসদ-বিধায়ক দ্বন্দ্বের ফল কি ভাল হবে? সোমনাথ বলেন, ‘‘দলের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে, কে সাদা, কে কালো! আমি নতুন করে আর কী বলব!’’