আমরাইয়ে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান। — বিকাশ মশান।
দেশজোড়া অসহিষ্ণুতার অভিযোগ, প্রতিবাদে শিল্পী-সাহিত্যিকদের পুরস্কার ফেরতের ঘটনার মধ্যেই ভাইফোঁটাকে কেন্দ্র করে একটু অন্যরকম আয়োজন করলেন দুর্গাপুরের আমরাই গ্রামের বাসিন্দারা।
গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, স্থানীয় নেতাজি সঙ্ঘের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ভাইফোঁটার আসরে এসেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পুরুষ-মহিলারা। স্থানীয় যুবক শেখ আইনুল, শেখ আবু, শেখ ফিরোজেরা বেশ আগ্রহ নিয়েই সকাল সকাল চলে এসেছেন ফোঁটা নিতে। চন্দনের থালা হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন জাহানারা খাতুন, আসমিনা খাতুনেরাও। তাঁরা জানান, ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় এমন অভিনব অনুষ্ঠানের কথা শুনে এসেছি বহু দিন ধরেই। তবে এ বার ধর্ম নির্বিশেষে দাদা-ভাইদের ফোঁটা দিতে পেরে ভীষণ ভাল লাগছে। ফোঁটা পেয়ে খুশি আইনুলরাও। কিশোরী রিয়া সূত্রধরেরা জানান, তাঁরা বহু বছর ধরে ফোঁটা দিচ্ছেন। কিন্তু এ বারের আনন্দটা একটু বেশি। কেন? ‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা’ বলতে বলতেই রিয়ার বক্তব্য, ‘‘এ বার দাদা-ভাইয়ের সংখ্যাও যে বাড়ল।’’
গ্রাম সূত্রে জানা গেল, নেতাজি সঙ্ঘ ৪৪ বছর ধরে কালীপুজোর আয়োজন করে আসছে। এ বারই প্রথম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন। আচমকা এমন পরিকল্পনা নেওয়া হল কেন? উদ্যোক্তাদের তরফে উৎপল সাহা বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামে বহু সংখ্যালঘু মানুষ রয়েছেন। ভাইফোঁটার আসরে সকলে মিলে সহিষ্ণুতা ও সম্প্রীতির বার্তা দিতে চেয়েছি।’’ গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা হাজি মহম্মদ জর্জিসের কথাতেও সম্প্রীতির সুর, ‘‘গ্রামে আমরা সকলের ভাল-মন্দ ভাগ করে নিই। তাই এমন অনুষ্ঠান তো সকলেরই।’’
শুক্রবার, ভাইফোঁটায় উপস্থিত ছিলেন পুরসভার মেয়র পারিষদ সুস্মিতা ভুঁই, লাভলি রায়, আইনজীবী দেবব্রত সাঁই, বি-জোন ফাঁড়ির আধিকারিক মইনুল ইসলাম প্রমুখ।