প্রার্থী হওয়ার পরে দলের একাংশ তিনি দলের সঙ্গে যুক্ত নন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। কর্মিসভায় এসে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ অগস্তি সেই অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করলেন, কংগ্রেসকে সমর্থন করার জন্য সিপিএমের লোকজনের হাতে তাঁর পরিবার এক সময়ে যথেষ্ট অত্যাচারিত হয়েছে। এমনকী, সাইঁবাড়ির পরে তাঁর পরিবারই এই জেলায় সবচেয়ে অত্যাচারিত বলেও রবিবার দাবি করলেন তিনি।
এ দিন বর্ধমানের ওই কর্মিসভায় প্রার্থী প্রদীপবাবুর অভিযোগ, “আমরা কোনও দিন জমির ধান ঘরে তুলতে পারতাম না। পুকুরের মাছ মেরে দেওয়া হত। গোয়ালের গরু ছেড়ে দেওয়া হত। বাগানের গাছ কাটা, চাষের লাঙল ভাঙাকত কী-ই না হয়েছে আমাদের সঙ্গে!” তাঁর ক্ষোভ, “তবু সংবাদমাধ্যমে অনেকে আমাকে অকংগ্রেসি, বহিরাগত বলছে।” তাঁর দাবি, তিনি ও বিপিন ভোরাদু’জনই প্রার্থী হতে চেয়ে দলীয় নেতৃত্বের কাছে চিঠি লিখেছিলেন। বিপিনবাবু প্রার্থী হওয়ার পরেও সরে দাঁড়ানোয় দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে।” প্রদীপবাবুর আরও বক্তব্য, “আমি দেরিতে নেমেছি। কিন্তু প্রচারে কয়েক দিনের মধেই ঝড় তুলব। এমন প্রচার করব, মানুষের তাক লেগে যাবে।”
কিন্তু এই জেলায় তাঁদের দলের অনেক কর্মী যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। ফলে, সংগঠন বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। প্রদীপবাবু অবশ্য বলেন, “কে বলেছে সংগঠন নেই? কংগ্রেসের মত সংগঠিত দল ভারতে নেই। প্রতি গ্রামে আমাদের কর্মীরা রয়েছেন। তাই বুথে এজেন্ট দিতে আমার সমস্যা হবে না।” এ দিন কর্মিবৈঠকে জেলা কংগ্রেস নেতা কাশীনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, “তৃণমূলের মাত্র আড়াই বছরের কিছু বেশি সময়ের শাসনে ওদেরই অনেক কর্মী-সমর্থক দলের উপরে বীতশ্রদ্ধ। তাঁরা গোপনে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। বিপদের দিনে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়াতে চাইছেন। তাই আমাদের শক্তি নেহাত কম বলে ভাবা ঠিক নয়।”
জেলা কংগ্রেস সভাপতি (গ্রামীণ) আভাস ভট্টাচার্যেরও দাবি, “তৃণমূলের বিক্ষুব্ধরাই এ বার ভোটে আমাদের শক্তি হতে চলেছেন। তাই কংগ্রেসকে একেবারে দুর্বল বলে যেন কেউ উড়িয়ে না দেন।” প্রদীপবাবুর নির্বাচনী এজেন্ট স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “সিপিএমের অত্যাচারে মানুষ তৃণমূলে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা অত্যাচার ছাড়া আর কিছু পাননি। মোহভঙ্গের পরে তাঁরা এখন পরিবর্তনের পরিবর্তন চেয়েছেন। তাই বর্ধমানের এই কেন্দ্রে কংগ্রেস ভাল ফল করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।”
সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আব্দুুল রাজ্জাক মণ্ডসের পাল্টা বক্তব্য, “ভোটের বাজার ধরতে অনেকে নানা ধরনের গালগল্প ছড়িয়ে থাকে।” তাঁর দাবি, “সিপিএম যদি প্রদীপবাবুর উপর অত্যাচারই করে থাকেন, তাহলে তিনি এতগুলি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মালিক হলেন কী করে?” বর্ধমান জেলা (্গ্রামীণ) তৃণমূলের সভাপতি ও রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের কটাক্ষ, “প্রদীপবাবু দুঃস্বপ্ন দেখছেন। ওনার অবিলম্বে জেগে ওঠা দরকার।”