রমজানে রেশনে আসেনি যথেষ্ট ময়দা-চিনি, ক্ষোভ

ঘোষণার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। এমনই অভিযোগ করেছেন বর্ধমান জেলার রেশন ডিলারেরা। রমজান মাস উপলক্ষে জেলা খাদ্য দফতর রেশন গ্রাহকদের মাথাপিছু যা সরবরাহ করতে বলেছে, তার চেয়ে অনেক কম খাদ্য সরবরাহ করা হয়েছে জেলার পাঁচটি মহকুমাতেই, অভিযোগ তাঁদের।

Advertisement

রানা সেনগুপ্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৪ ০১:৪১
Share:

ঘোষণার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই।

Advertisement

এমনই অভিযোগ করেছেন বর্ধমান জেলার রেশন ডিলারেরা। রমজান মাস উপলক্ষে জেলা খাদ্য দফতর রেশন গ্রাহকদের মাথাপিছু যা সরবরাহ করতে বলেছে, তার চেয়ে অনেক কম খাদ্য সরবরাহ করা হয়েছে জেলার পাঁচটি মহকুমাতেই, অভিযোগ তাঁদের।

গত ১১ জুলাই জেলা খাদ্য নিয়ামককে লেখা চিঠিতে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক পরেশনাথ হাজরা অভিযোগ করেছেন, খাদ্য নিয়মকের নির্দেশ, রমজান মাস উপলক্ষে সমস্ত শ্রেণির গ্রাহকদের জন্য মাথা পিছু ২০০ গ্রাম ছোলা, ৪০০ গ্রাম ময়দা, ৪০০ গ্রাম চিনি দিতে হবে। কিন্তু যে চিনি, ছোলা, ময়দা খাদ্য দফতর জেলার পাঁচটি মহকুমা সরবরাহ করেছে, তাতে রেশন ডিলারদের পক্ষে মাথা পিছু মাত্র ২৪ গ্রাম ছোলা, ৩৪ গ্রাম ময়দা ও ৭২ গ্রাম চিনি দেওয়া সম্ভব।

Advertisement

চিঠিতে পরেশনাথবাবু আরও অভিযোগ করেন, জেলায় এপিএল, বিপিএল, অন্নপূর্ণা অন্ন যোজনা প্রকল্প মিলিয়ে মোট রেশন গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৭২ লক্ষ। ফলে, রমজান উপলক্ষে খাদ্য নিয়ামকের নির্দেশ মতো কাজ করতে হলে দরকার ১৪৩৬৪ কুইন্ট্যাল ছোলা, ২৮৭২৮ কুইন্ট্যাল ময়দা ও ২৮৭২৮ কুইন্ট্যাল চিনি। কিন্তু জেলা খাদ্য দফতর মাত্র এক বার ওই ছোলা, ময়দা ও চিনি দিতে বললেও সরবরাহ করেছে ১৭৫০ কুইন্ট্যাল ছোলা, ২৪৫০ কুইন্ট্যাল ময়দা ও ৫২০০ কুইন্ট্যাল চিনি। অর্থাৎ, ছোলার ক্ষেত্রে ১২৬১৪ কুইন্ট্যাল, ময়দার ক্ষেত্রে ২৬২৭৮ কুইন্ট্যাল ও চিনির ক্ষেত্রে ২৩৫২৮ কুইন্ট্যাল ঘাটতি রয়েছে।

জেলার পাঁচ মহকুমা কালনা, কাটোয়া, দুর্গাপুর, আসানসোল ও বর্ধমান সদরের রেশন ডিলারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক বৈঠকে ওয়েস্ট বেঙ্গল এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের বর্ধমান জেলার সভাপতি আবুল হাসান মোল্লার অভিযোগ, “পবিত্র এই রমজান মাস উপলক্ষে রেশনে বেশি বেশি চিনি, ছোলা, ময়দা ইত্যাদি দেওয়ার কথা খাদ্য দফতরের তরফে ঘোষণা করা হলেও বাস্তবে সরবরাহ করা হচ্ছে দরকারের তুলনায় অনেক কম।”

পরেশনাথবাবুদের আরও অভিযোগ, খাদ্য দফতরের নির্দেশনামার সঙ্গে বাস্তবে সরবরাহ করা মালের পরিমাণে প্রচুর ঘাটতি থাকায় মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়বেন রেশন ডিলারেরা। তাঁদের দাবি, ডিলারদের বাঁচাতে রমজান মাসে সরবরাহ করা ছোলা, ময়দা ও চিনির আসল পরিমাণ খাদ্য দফতর হয় ঠিক তথ্য জানিয়ে বিজ্ঞাপন দিক, অথবা প্রতিটি রেশন ডিলারের দোকানে ওই তথ্য পাঠিয়ে জানানো হোক, গ্রাহকেরা কেন কম পরিমান ছোলা, ময়দা বা চিনি পাচ্ছেন।

কম ছোলা, ময়দা ও চিনি যে সরবরাহ করা হয়েছে, তা কবুল করেছেন জেলা খাদ্য নিয়ামক সাধনকুমার পাঠক। তিনি বলেন, “রেশন দোকান থেকে অনেকেই ছোলা বা ময়দা না-ও নিতে পারেন। কিন্তু মাত্র ৫২০ মেট্রিক টন সরবরাহ করা চিনি নিয়ে যে সমস্যা দেখা দেবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। রেশনে সরবরাহ করা সর্ষের তেলেরও ঘাটতি রয়েছে। তবে আমরা রেশন ডিলারদের বলেছি, যতক্ষণ তাঁদের কাছে ওই চিনি, ময়দা ও ছোলা থাকবে, ততক্ষণই তাঁরা গ্রাহক পিছু ২০০ গ্রাম ছোলা এবং ৪০০ গ্রাম করে ময়দা ও চিনি যতজনকে সম্ভব দেবেন। তার পরে মজুত খাদ্য ফুরিয়ে গেলে তা অন্য গ্রাহকদের জানিয়ে দেবেন। হাতে যা মালপত্র পেয়েছি তা-ই জেলার রেশন ডিলারদের কাছে পাঠিয়েছি।”

জিনিস না পেয়ে গ্রাহকেরা চড়াও হতে পারেন, এই আশঙ্কা তাই কাটছে না রেশন ডিলারদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement