কলেজে ঢুকে ছাত্র সংসদের কয়েকজন নেতাকে মারধর করে গেল জনা চল্লিশেক বহিরাগত। শুক্রবার বিকেল ৩টে নাগাদ বর্ধমানের রাজ কলেজে ঘটনাটি ঘটে। গণ্ডগোল থামাতে গিয়ে প্রহৃত হয়েছেন এক কলেজ কর্মীও। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে আহতদের।
ছাত্র সংসদের নেতাদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বিকেলে ক্লাস শেষ হওয়ার পরে দর্শন অনার্সের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্র গলায় রুমাল বেঁধে এক ছাত্রীর উদ্দেশ্য অশ্লীল মন্তব্য করে। ওই ঘটনার প্রতিবাদ করেন সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক সায়ন সেন। সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ হাজরা বলেন, “দর্শনের ওই ছাত্রের সঙ্গে সায়নের তীব্র বচসা বাধে। পরে সংসদের অন্যেরা এলে ছেলেটি পালিয়ে যায়। ওই দিনই সে কলেজে লোকজন ডেকে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করে।” এ দিনও ওই ঘটনার জেরেই প্রায় জনা চল্লিশেক ছেলে রড, চপার, বাঁশ, লাঠি নিয়ে কলেজে ঢুকে ছাত্রনেতাদের মারধর শুরু করে বলে অভিযোগ। আহত হন শেখ বাপ্পা, সায়ন সেন, এরশাদ আলমের মতো ছাত্র সংসদের পদাধিকারীরা। গোলমার ঠেকাতে গিয়ে আহত হন কলেজের অফিস কর্মী সুমিত শর্মাও। হামলাকারীরা কলেজের টেবিল-চেয়ার, মোটরবাইক এমনকী কলেজ চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাম্বুল্যান্সও ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। টিচার-ইন-চার্জ তারকেশ্বর মণ্ডল পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তাড়া করে হামলাকারীদের বের করে দেয়।
অধ্যক্ষ বলেন, “লুঙ্গি পরে কয়েকজন কলেজে ঢুকে সায়নক খুঁজতে শুরু করে। প্রচণ্ড গালিগালাজ করছিল ওরা। কী অভিযোগ জানতে চাইলেও কিছু বলেনি। তখন ওদের কলেজ থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিই।” ছাত্র সংসদের দাবি, দর্শনের ওই ছাত্রকে বরখাস্ত করতে হবে। অধ্যক্ষ বলেন, “ওই ছাত্রকে ডেকে শো-কজ করা হবে। তবে ওকে বরখাস্থ করার আগে ঘটনাটি নিয়ে পরিচালন সমিতির বৈঠকে আলোচনা হবে।” অভিযুক্ত ছাত্রটির অবশ্য খোঁজ মেলেনি।
বহিরাগতেরা কলেজে ঢুকে এভাবে ভাঙচুর, মারধর চালানোয় আতঙ্কিত পড়ুয়ারা। অধ্যক্ষ বলেন, “রাতে পুলিশকে কলেজের বাইরে টহল দিতে বলেছি।” বর্ধমান থানার আইসি আব্দুল গফ্ফর বলেন, “পুলিশ গিয়ে ভাঙচুরে তেমন প্রমাণ পায়নি। শুক্রবার সন্ধ্যের পরে কলেজের ছাত্র সংসদের তরফে একটি অভিযোগ করা হয়েছে। তাতেও ভাঙচুরের কথা নেই। তবে কলেজের ঢুকে গোলমাল পাকানোর ঘটনায় দু’জনের নামে অভিযোগ হয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত করছি।”