দুর্গাপুর সিটি সেন্টারে একটি পার্কের সামনে। ছবি: বিশ্বনাথ মশান।
শীতের হাওয়া বইতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই ভিড় বাড়ছিল পার্ক ও পিকনিকের জায়গা। বড়দিন বা বছরের শেষ দিনজমজমাট হয়ে উঠেছিল এই সব জায়গাগুলি। কিন্তু বছরের প্রথম দিনের ভিড় টেক্কা দিল আগের সেই দিনগুলিকে। দুর্গাপুর শহরের নানা পার্কে শুধু এই শহর নয়, আশপাশের এলাকা, এমনকী পার্শ্ববর্তী জেলা থেকেও বেড়াতে এলেন মানুষজন।
কেউ নদীর চরেই হাত গরম করছেন ব্যাডমিন্টন র্যাকেট হাতে, কেউ বা আবার গানের তালে পা মেলাচ্ছেন এমন নানা ছবি বৃহস্পতিবার দেখা গেল দুর্গাপুরের বিভিন্ন পার্ক ও পিকনিকের জায়গায়। ভেঙে পড়া ভিড় দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এ বারের মতো এত লোক গত কয়েক বছরে বর্ষবরণের দিনে দেখেননি তাঁরা। পিকনিকে আসা লোকজন জানাচ্ছেন, মেঘলা আবহাওয়া বনভোজনের জন্য আদর্শ। সে কারণে সকাল থেকেই দলে-দলে লোক এসেছেন বলে মনে করছেন নানা পার্ক কর্তৃপক্ষও।
এ দিন দুর্গাপুরের ইস্পাতনগরীর একটি পার্কে গিয়ে দেখা গেল, নানা জেলা থেকে বাস বা ছোট গাড়িতে করে মানুষজন এসেছেন সেখানে। বেলা বাড়াতেই ভিড়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পিকনিকের আয়োজন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, পার্কে এত লোক ইদানীং কালে তাঁরা দেখেননি। খাবার-দাবার নিয়ে জাঁকিয়ে বসা কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, পার্কের ভিতর সব রকমের সুযোগ-সুবিধা হাতের নাগালে। তাই এখানে পিকনিক করা অনেক সহজ। সিউড়ি থেকে এসেছিলেন ময়না মুখোপাধ্যায়। রান্না করতে করতে তিনি বলছিলেন, “বাড়ির বাচ্চাদের নিয়ে ঘোরার জন্য পার্ক সব থেকে ভাল জায়গা। এখানকার পরিবেশও ভীষণ সুন্দর।” পিকনিক করার উদ্দেশ্য না নিয়েও অনেকে পার্কে এসেছিলেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে ভিড় জমানো কচিকাঁচাদের হুটোপুটিতে সরগরম ছিল পার্কগুলি।
দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের একটি পার্কে গিয়ে দেখা গেল, ছবিটা প্রায় একই রকম। এই পার্কটিতে আবার টয় ট্রেন থেকে শুরু করে জলে নানা খেলাধুলো, নানাবিধ ব্যবস্থা করেছেন কর্তৃপক্ষ। পার্ক কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার পিকনিক করতে অন্য বছরের তুলনায় অন্তত ২০টি গাড়ি বেশি এসেছিল। ভিড় সামাল দেওয়ার ফাঁকে পার্কের ম্যানেজার রবিন চট্টরাজ বলেন, “অন্য বছরগুলিতে পার্কে তেমন ভিড় হয়নি। কিন্তু এ বার আমাদের প্রত্যাশা ছাপিয়ে গিয়েছে।”
পার্কের পাশপাশি শহরের জনপ্রিয় পিকনিকের জায়গা দুর্গাপুর ব্যারাজ। সেখানেও ভিড় ছিল রীতিমতো। নদের চরে হাত-পা ছড়িয়ে বনভোজনে আগ্রহ দেখা গিয়েছে অনেকের মধ্যেই। কয়েক জন আবার ঝুঁকির তোয়াক্কা না করে দামোদরে স্নানেও নেমে পড়লেন। এ দিন সিনেমা হল ও শপিংমলগুলিতেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।