কাটোয়া হাসপাতালের পরিষেবা নিয়েই ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র।
বোলপুরগামী কাটোয়া-বোলপুর রুটের একটি বাস উল্টে জখম হলেন ৪৫ জন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর জখম আবস্থায় পাঁচ জনকে বর্ধমান মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ২৪ জন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে সরব হন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে অন্য রাজনৈতিক দলগুলি। মহকুমাশাসক মৃদুল হালদার হাসপাতালে এলে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয়রা। এ দিকে, বিক্ষোভ চলাকালীন কংগ্রেসের দুই নেতাকর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের দিকে। সোমবার বিকেলের ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া থেকে বোলপুর যাচ্ছিল বাসটি। কেতুগ্রাম থানার পাঁচুন্দি বাসস্টপের আগে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি উল্টে যায়। যাত্রী কাটোয়ার রায়েরপাড়া গ্রামের সুফল লাহা বলেন, “বোলপুরে দিদির বাড়ি যাচ্ছিলাম। বাসটি বেশ জোরেই চলছিল। যাত্রীরা বেশ কয়েকবার চালককে গতি কমানোর জন্য বলেন। পাঁচুন্দি ঢোকার আগে কাঠমিলের কাছে বাসটি দু’বার হেলে গিয়েছিল। তারপরেই উল্টে যায় বাসটি।” খবর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ও কেতুগ্রাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। যাত্রীদের প্রথমে কেতুগ্রাম ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁদের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। মহকুমা হাসপাতালে এসে চিকিৎসকদের দেখতে পাননি এলাকার বাসিন্দারা। শুধু তাই নয়, এক্স-রে ঘরও বন্ধ ছিল, হাসপাতাল চত্বরে অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়ে থাকলেও চালকদের দেখা যায়নি। এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। বিশৃঙ্খলার খবর পেয়ে হাসপাতালে মহকুমাশাসক মৃদুল হালদার ও ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়।
মহকুমা শাসকের সামনেই হাসপাতালের ভিতর দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তোলাকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে বচসা শুরু হয়। ওই সময় কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়কের ভাইপো রনজি চট্টোপাধ্যায়-সহ দু’জনকে তৃণমূল মারধর করে বলে অভিযোগ। কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “কাটোয়া হাসপাতালে অব্যবস্থার জন্য দুর্ঘটনার পরেই কংগ্রেসের কয়েকজন এসে জখমদের নানা ভাবে সাহায্য করছিলেন। অনেক পরে পতাকা লাগিয়ে তৃণমূল হাসপাতালে ঢোকে। তারপর তৃণমূলের শহর সভাপতির নেতৃত্বে কংগ্রেসের ছেলেদের মহকুমাশাসকের সামনেই মারধর করা হয়।” মহকুমাশাসক মৃদুল হালদার বলেন, “এই ঘটনা অনভিপ্রেত। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে ঠিকমত জখমদের পরিষেবা দেওয়া গিয়েছে। পরিষেবা নিয়ে রোগী কল্যাণ সমিতিতে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হবে।” তৃণমূলের শহর সভাপতি অমর রাম বলেন, “মহকুমা শাসককে কংগ্রেসের লোক হেনস্তা করছিল। সেই সময়েই হাতাহাতি হয়। এই ঘটনায় আমি বা আমার দলের কেউ যুক্ত নয়।”