শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি। আসানসোলে তোলা নিজস্ব চিত্র।
শিল্পাঞ্চলের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পর্যটন শিল্পে নজর, অনুসারী শিল্প সংস্থাকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দাবি মুখ্যমন্ত্রী জানাতে চান শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা। আজ, বৃহস্পতিবার আসানসোল বণিকসভার উদ্যোগে পোলো মাঠে তৃতীয় শিল্প-বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে তিনি একটি চা-চক্রে বণিকসভার প্রতিনিধি এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলবেন। সেখানে তাঁর কাছে কিছু প্রস্তাব রাখা হবে বলে বণিকসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
দুপুর ১২টা নাগাদ ওই মেলার উদ্বোধন হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে থাকার কথা রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এবং শ্রমমন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক মলয় ঘটকের। মেলায় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ৩০০ স্টল থাকছে। মেলায় আসা ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র শিল্পসংস্থার কর্ণধারদের মত বিনিময়ের পাশাপাশি নানা রকম জিনিসপত্র কেনাবেচাও হবে। মেলা চলবে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
আসানসোল বণিকসভার সভাপতি সুব্রত দত্ত জানান, কলকাতায় বিশ্ববঙ্গ সম্মেলনে রাজ্যের শিল্প-বাণিজ্য প্রসারে যে উদ্যোগ হয়েছে, তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এই শিল্পাঞ্চলেও অর্থনীতির প্রসার হবে। তবু আসানসোল মহকুমার জন্য একটি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প হাব তৈরির প্রস্তাব তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাখবেন। একই সঙ্গে এখানে কয়লা ও ইস্পাত বিষয়ক অনুসারী শিল্পের উন্নতির জন্য সরকারি সহযোগিতারও আবেদন জানাবেন। সুব্রতবাবু জানান, ইস্কোর আধুনীকিকরণ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের মুখে। রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা সংস্থা ইসিএলেও আধুনিকীকরণ চলছে পুরোদমে। এই দুই শিল্পেই প্রচুর অনুসারী সামগ্রীর দরকার হয়। সুব্রতবাবু বলেন, “আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এখানকার অনুসারী শিল্পোদ্যোগীদের আর্থিক সংস্থান বাড়াতে ব্যাঙ্ক ঋণ ও কর ছাড়ের বিষয়ে বাড়তি কিছু সরকারি সুযোগ-সুবিধা দিতে আবেদন করব।”
আসানসোলকে ঘিরে পর্যটন শিল্পেরও উন্নতি চাইবেন বলে জানান বণিকসভার প্রতিনিধিরা। সংগঠনের সহ-সভাপতি কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় জানান, এই শিল্পাঞ্চলে মাইথন, বাথানবাড়ি, সিদাবাড়ির সবুজদ্বীপ, কল্যাণেশ্বরী, মুক্তাইচণ্ডী, নিরালা উষ্ণ প্রস্রবণের মতো নানা দর্শনীয় স্থান আছে। রয়েছে খনিও। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য সেগুলি আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যেতে পারে। তাঁরা মনে করেন, সপ্তাহান্তে এই অঞ্চলগুলিতে ভ্রমণের বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থা করতে পারলে এই পেশায় জড়িয়ে পড়বেন এলাকার বেকার যুবকেরা। কর্মসংস্থানের প্রসার হলে এলাকার অর্থনীতিরও উন্নতি হবে বলে মনে করেন বণিকসভার প্রতিনিধিরা। তাঁদের আশা, মুখ্যমন্ত্রীর সামনে এই বিষয়গুলি তুলে ধরতে পারলে তিনি নিশ্চয় বিবেচনার মধ্যে আনবেন।