ফুটপাথের দোকানে পলিথিনের ছাউনিতে কার্যত জতুগৃহ আসানসোল বাজার। এই ছাউনি তুলে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। নিজস্ব চিত্র।
প্রশাসনের কাছে নিবন্ধীকরণ করাতে হবে ফুটপাথের দোকানগুলিকেও। আসানসোলে এক বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মহকুমা প্রশাসন। আসানসোল মূল বাজার-সহ আশপাশের এলাকার ফুটপাথের দোকানগুলিকে এই নিবন্ধীকরণ করাতে হবে বলে জানানো হয়েছে। মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস জানান, দুর্গাপুজোর আগেই এই ব্যবস্থা লাগু হবে। ফুটপাথের দোকানগুলিকে প্লাস্টিকের পরিবর্তে অন্য কিছুর ছাউনি ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
আসানসোলে মূল বাজার এলাকা তো বটেই, আশপাশেও ফুটপাথ দখল করে ব্যবসার ছবি দেখা যায় নিয়মিত। কিন্তু এই ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা প্রশাসনের নেই। প্রশাসনের যুক্তি, এই সব দোকানগুলিকে এত দিন নিবন্ধীকরণ না করানোর জেরেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। ফুটপাথের দোকান নিয়ে শহরবাসীর অভিযোগও অনেক দিনের। বাজারে আসা ক্রেতারা অভিযোগ করেন, ফুটপাথ দখল করে দোকান বসে যাওয়ায় হাঁটাচলা করা দায় হয়ে দাঁড়ায়। ফুটপাথ দখল করে বসে থাকা অনেক দোকানদার পথচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করেন বলে অভিযোগ। বড় দোকানে কেনাকাটা করতে যাওয়ার সময়ে ফুটপাথের ব্যবসায়ীরা মাঝে-মধ্যে বাধা দেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ধরনের নানা অভিযোগ ওঠায় এই নিবন্ধীকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন যাঁরা ফুটপাথে বসে ব্যবসা করছেন একমাত্র তাঁদেরই নিবন্ধীকরণ করা হবে। নতুন করে আর কোনও হকারকে ফুটপাথে বসতে দেওয়া হবে না। মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস বলেন, “আসানসোল বাজারের ফুটপাথের দোকানদারদের অবশ্যই প্রশাসনের সমস্ত নির্দেশ মেনে চলতে হবে।”
ফুটপাথের দোকানগুলির সব চেয়ে বড় সমস্যা হল প্লাস্টিকের ছাউনি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সব ক’টি দোকানে এমন ভাবে পলিথিনের ছাউনি টাঙানো আছে যে এক বার যদি আগুন লাগে তবে আর রক্ষা থাকবে না। গোটা বাজার পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে সেক্ষেত্রে। এ নিয়ে অনেক বার প্রশাসনকে অভিযোগও জানিয়েছেন এলাকার মানুষজন। মহকুমাশাসক জানান, ফুটপাথের দোকানের সামনে থেকে পলিথিনের ছাউনি খুলে ফেলতে হবে। অন্য কিছু দিয়ে ছাউনি তৈরি করা যেতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, কোনও অবস্থায় যেন সেই ছাউনি অন্য দোকানকে আড়াল করে না ফেলে।
আসানসোল বাজারে কয়েক জন ফুটপাথের দোকানদার জানান, এই নিবন্ধীকরণের সিদ্ধান্তে তাঁরা খুশি। এটি এক রকমের স্বীকৃতি বলে মনে করছেন। প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ে প্রশাসনের নির্দেশ মানা হবে বলে জানান তাঁরা।