ধৃত দুই অটো চালক, রাশ টানার সিদ্ধান্ত পারমিটে

মারধরের অভিযোগে অবশেষে দুই অটোচালককে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার রাতে দুর্গাপুরে ধৃত দুই অটোচালকের নাম রাজু গড়াই ও দিলীপ বড়ুয়া। গত কয়েক দিনে শহরে অটো-দৌরাত্ম্যের অভিযোগ উঠেছে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে। আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের তরফে সোমবার জানানো হয়, এ বার অটোর পারমিট দেওয়ার ক্ষেত্রে রাশ টানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৪ ০১:২৫
Share:

অটোচালকদের মারধরে জখমেরা। ফাইল চিত্র।

মারধরের অভিযোগে অবশেষে দুই অটোচালককে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার রাতে দুর্গাপুরে ধৃত দুই অটোচালকের নাম রাজু গড়াই ও দিলীপ বড়ুয়া। গত কয়েক দিনে শহরে অটো-দৌরাত্ম্যের অভিযোগ উঠেছে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে। আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের তরফে সোমবার জানানো হয়, এ বার অটোর পারমিট দেওয়ার ক্ষেত্রে রাশ টানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার এক মোটরবাইক আরোহীকে ধাক্কা মারে একটি অটো। অভিযোগ ওই বাইক আরোহী প্রতিবাদ করলে তাঁকে মারধর ও গালিগালাজ করেন অটোচালক, জেসি বোস রোড এলাকার বাসিন্দা রাজু গড়াই। পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে মোটরবাইক আরোহী রানা ঘোষ জানান, শহরের ইস্পাতনগরীর জেএম সেনগুপ্ত রোডে ছেলেকে নিয়ে মোটরবাইকে যাওয়ার সময়ে অটোটি তাঁদের ধাক্কা মারে। প্রতিবাদ করতেই অটোচালক তাঁর উপরে চড়াও হয়ে মাথায় ও মুখে ঘুষি মারে। আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে এলে ওই চালক অটো নিয়ে পালিয়ে যায়। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করান রানাবাবু। শনিবার দুপুরে আবার সিটি সেন্টারের একটি সিনেমা হলের সামনের রাস্তায় অটোর ধাক্কায় জখম হন মোটরবাইক আরোহী, বেনাচিতির বাসিন্দা মলয় দত্ত ও তাঁর বান্ধবী পল্লবী জানা। তাঁদের অভিযোগ, প্রতিবাদ করায় সেই অটোচালক, পলাশডিহার বাসিন্দা দিলীপ বড়ুয়া অন্য কয়েক জন অটোচালককে ডেকে তাঁদের মারধর শুরু করে। তাঁদের বাঁচাতে এসে জখম হন রাজেশ তিওয়ারি নামে এক যুবক। পুলিশ পৌঁছলে ওই অটোচালকেরা পালিয়ে যায়। জখম তিন জনকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।

অভিযোগ মেলার পরে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েও অভিযুক্ত অটোচালকদের ধরতে পারেনি পুলিশ। শেষ পর্যন্ত রবিবার রাতে দু’জনকেই পাকড়াও করা হয়। সোমবার তাদের দুর্গাপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক রাজু গড়াইয়ের জামিন মঞ্জুর করেন। তবে দিলীপ বড়ুয়াকে ছ’দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

Advertisement

দুর্গাপুরে অটোচালকদের বিরুদ্ধে যাত্রীরা মাঝে-মাঝেই দুর্ব্যবহার, চড়া ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করেন। এর সঙ্গে রয়েছে সন্ধ্যার পরে অটো উধাও হয়ে যাওয়া, রুটে অনিয়মিত ভাবে অটো চলাচল, ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ-সহ নানা অভিযোগ। পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর মহকুমায় বর্তমানে অটোর সংখ্যা ৯৬০। অভিযোগ, বহু অটোই রুটে চলে না। চললেও অনিয়মিত। রুটে না গিয়ে চড়া ভাড়া নিয়ে ‘রিজার্ভ’ যাওয়ার জন্য বসে থাকেন বহু অটোচালক। বহু অটোয় আবার রুটের উল্লেখও থাকে না। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই, কোন রুটে সেগুলি চলে। অভিযোগ, প্রায় ১৩০টি অটো চলাচল করছে ‘পারমিট’ ছাড়াই। আরও পাঁচশো অটোর জন্য আবেদনপত্র জমা পড়েছে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

দুর্গাপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক সজল মণ্ডল অবশ্য জানান, এ বার অটোর পারমিট দেওয়ার ক্ষেত্রে রাশ টানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে এক জনের নামে একাধিক অটো থাকায় সমস্যা বাড়ছে। ঠিক হয়েছে, এক জনের নামে একটিই অটো থাকবে। তবে আসানসোল বা শিলিগুড়ির মতো দুর্গাপুরে পারমিট দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ এখনও জারি হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement