সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ড

দখল-দৌরাত্ম্যে বিপাকে যাত্রী, ক্ষোভ রাস্তা নিয়েও

সীমানা পাঁচিলের ধারে গজিয়ে ওঠা অবৈধ গুমটি তো ছিলই। যাত্রীদের বসার জায়গাও দখল করে ব্যবসা শুরু হয়েছে। বাসস্ট্যান্ডের ভিতরের রাস্তা ভরে গিয়েছে খানাখন্দে। তার উপর দিয়েই দৈনিক যাতায়াত করে দূরপাল্লার বহু বাস। যাত্রীদের অভিযোগ, বিপদের ঝুঁকি নিয়েই তাঁদের নিত্য যাতায়াত। ঝাঁ চকচকে সিটি সেন্টারের মাঝে বেহাল বাসস্ট্যান্ডের সংস্কার নিয়ে হেলদোল নেই প্রশাসনের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৪ ০২:১৬
Share:

পাথর উঠে এবড়ো-খেবড়ো দশা বাসস্ট্যান্ডের। নিজস্ব চিত্র।

সীমানা পাঁচিলের ধারে গজিয়ে ওঠা অবৈধ গুমটি তো ছিলই। যাত্রীদের বসার জায়গাও দখল করে ব্যবসা শুরু হয়েছে। বাসস্ট্যান্ডের ভিতরের রাস্তা ভরে গিয়েছে খানাখন্দে। তার উপর দিয়েই দৈনিক যাতায়াত করে দূরপাল্লার বহু বাস। যাত্রীদের অভিযোগ, বিপদের ঝুঁকি নিয়েই তাঁদের নিত্য যাতায়াত। ঝাঁ চকচকে সিটি সেন্টারের মাঝে বেহাল বাসস্ট্যান্ডের সংস্কার নিয়ে হেলদোল নেই প্রশাসনের।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময়ে দুর্গাপুরের গণ পরিবহণ ছিল একেবারেই সরকারি ব্যবস্থা নির্ভর। ১৯৬৩ সালে ‘দুর্গাপুর রাজ্য পরিবহণ সংস্থা’ গড়ে ওঠে। সরকারি বাস চালানোর উদ্যোগের সেই শুরু। আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের জায়গায় সিটি সেন্টারে গড়ে ওঠে পরিবহণ সংস্থার বাসস্ট্যান্ড। পরে সেই সংস্থা বদলে যায় ‘দক্ষিণবঙ্গ রাজ্য পরিবহন সংস্থা’য়। চালু হয় বেসরকারি বাস পরিষেবা। সরকারি বাসের পাশাপাশি বেসরকারি বাসগুলিও এই স্ট্যান্ডই ব্যবহার করে। এখন এই বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতি আধ ঘণ্টায় কলকাতাগামী সরকারি ও বেসরকারি বাস ছাড়ে। জামশেদপুর, দেওঘর, রাঁচি, টাটা, ভুবনেশ্বর, পুরী যাওয়ার নিয়মিত বাস রয়েছে এখান থেকে। এ ছাড়া শিলিগুড়ি, বর্ধমান, বোলপুর, বহরমপুর, মালদহ, নবদ্বীপ, আসানসোল, বরাকর, চিত্তরঞ্জন, কল্যাণী, হাবড়া, কৃষ্ণনগর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার বাস এই স্ট্যান্ড ব্যবহার করে। কয়েকশো টাউন সার্ভিস মিনিবাস রয়েছে। শহরের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীসংখ্যা আগের থেকে বেড়েছে বহুগুণ। কিন্তু সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়ে কোনও নজর দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ যাত্রীদের।

সপ্তাহান্তে কলকাতা থেকে দুর্গাপুর ফেরেন বি-জোনের বাসিন্দা তিতির মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “যত দিন যাচ্ছে, ঘিঞ্জি হয়ে যাচ্ছে বাসস্ট্যান্ডটি। যাত্রীদের বসার জায়গা, ফুটপাথ দখল করে গড়ে উঠেছে গুমটি। এক-এক সময় বেশ কয়েকটি বাস এক সঙ্গে স্ট্যান্ডে ঢুকলে দম বন্ধ লাগে।” দৈনিক আসানসোল যান বিধাননগরের শ্যামল রায়। তাঁর কথা।, “বিধাননগরের মতো শহরের অন্যতম অভিজাত এলাকা সিটি সেন্টার। অথচ, বাসস্ট্যান্ডে এসে তা মনে হয় না। বড়সড় সংস্কার হওয়া দরকার।” বেনাচিতি বাজারের ব্যবসায়ী বিকাশ বসুর বক্তব্য, “স্টেশনে যাওয়ার সময়ে সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ড হয়ে যাই। বাসের জানলা দিয়ে দেখি, জবরদখল বেড়েই চলেছে। অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।” বাসচালক রমেন পাণ্ডেরও ক্ষোভ, “বাসস্ট্যান্ডের ভিতরে রাস্তা গর্তে ভরা। সাবধানে চালাতে হয়। যন্ত্রাংশের ক্ষতির আশঙ্কাও থাকে।”

Advertisement

জবরদখল দ্রুত উচ্ছেদের আশ্বাস দেন আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, অতীতেও দখলদার উচ্ছেদ করা হয়েছে। তাঁর আশ্বাস, “অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফের বেআইনি দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।” এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিটি সেন্টার থেকে মূল বাসস্ট্যান্ডটি তুলে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। লেনিন সরণি, কাঞ্জিলাল অ্যাভিনিউ, বিসি রায় অ্যাভিনিউ ও ২ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে ঘেরা বন্ধ বিওজিএল কারখানা লাগোয়া প্রায় ৪০ একর জায়গা আছে পর্ষদের। সেখানেই নতুন বাসস্ট্যান্ডটি গড়ার পরিকল্পনা হয়েছে। আন্তঃরাজ্য এবং দূরপাল্লার বাসগুলি এই স্ট্যান্ড থেকে ছাড়বে। সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডের উপরে চাপ কমবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement