বন্ধ তৃণমূল অফিস। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ
জামুড়িয়ায় ফের তোলাবাজির অভিযোগ। আর সেই অভিযোগকে ঘিরে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
দলেরই এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগে রবিবার জামুড়িয়ার কুনস্তরিয়া এলাকায় তৃণমূলের অফিসে তালা দিয়ে বিক্ষোভ দেখাল অন্য গোষ্ঠী। সেই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিলেন জামুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির এক তৃণমূল সদস্যই! তোলাবাজি নিয়ে দলেরই একাংশ প্রকাশ্যে বিক্ষোভ দেখানোয় অস্বস্তিতে স্থানীয় নেতৃত্ব।
আসানসোলের তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক এ দিন বলেন, “গোষ্ঠী কোন্দল বরদাস্ত করা হবে না। দল বিচার করে দেখবে। দোষ প্রমাণিত হলে শাস্তি দেওয়া হবে।”
গত ক’দিনে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একাধিক তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছে আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে। মাসখানেক আগে দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে স্থানীয় এক নেতার বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট চালানো ও ব্যবসায়ীদের থেকে তোলা আদায়ের অভিযোগ জানান দুর্গাপুর (পূর্ব) কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরই জামুড়িয়ায় শ্যাম গোষ্ঠীর কারখানা কর্তৃপক্ষ ও একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে টাকা চাওয়ার অভিযোগ করে। ২ অগস্ট অন্ডালের সিএল জামবাদ খনিতে তোলা না পেয়ে এক ঠিকাদারকে খুনের অভিযোগে ধৃত হন আইএনটিটিইউসি নেতা কেদার পাল।
রবিবার তোলাবাজির অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। দলের একটি সূত্রের খবর, কুনস্তরিয়ায় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মনজয় চট্টোপাধ্যায় ও জামুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য জগন্নাথ শেঠের দু’টি আলাদা গোষ্ঠী। রবিবার দলের তপসি-কুনস্তরিয়া শাখা অফিসে তালা ঝুলিয়ে জগন্নাথবাবুর নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখান কয়েকশো দলকর্মী। জগন্নাথবাবুর অভিযোগ, “দল ক্ষমতায় আসার পরই মনজয়েরা সিন্ডিকেট চালু করেছে। ওরা তপসি রেল ইয়ার্ড থেকে মাল পরিবহণের সময়ে তোলা নিচ্ছে। অবৈধ কয়লা কারবারিদের থেকেও তোলা আদায় করছে।”
মনজয়বাবু অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেন, “তপসি রেল ইয়ার্ড দেড় মাস বন্ধ। কয়লা কারবারও দু’বছর বন্ধ। তোলাবাজির অভিযোগ অবান্তর।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, জগন্নাথরা ২০১১ সালের পরে দলে এসেছেন। ওঁকে পঞ্চায়েত ভোটে তিনিই প্রার্থী করেছিলেন। কিন্তু, এখন সিপিএমের কয়েক জনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওঁরা অবৈধ রোজগারের চক্র তৈরি করছেন। তাঁদের কাছে বাধা পাওয়ায় মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। মনজয়বাবু এই দাবি করলেও পূর্ব রেল সূত্রের খবর, জামুড়িয়ার রেল ইয়ার্ড বন্ধ নয়।
জামুড়িয়ার সিপিএম নেতা মনোজ দত্ত বলেন, “তোলাবাজি কে করছে জানি না। আমাদের কেউ এর সঙ্গে যুক্ত নয়।”